
মঙ্গলবার, ১২ ফেব্রুয়ারী ২০১৯
প্রথম পাতা » অনিয়ম-দুর্নীতি | জাতীয় সংবাদ | বক্স্ নিউজ | শিক্ষা সংবাদ | শিরোনাম » দালাল শিক্ষক রিপেল কে দিয়ে সরাসরি ঘুষ বানিজ্য : দৌলতপুরের শিক্ষা অফিসারের বিরুদ্ধে ঘুষ দুর্নীতি বদলী বানিজ্যের অভিযোগ
দালাল শিক্ষক রিপেল কে দিয়ে সরাসরি ঘুষ বানিজ্য : দৌলতপুরের শিক্ষা অফিসারের বিরুদ্ধে ঘুষ দুর্নীতি বদলী বানিজ্যের অভিযোগ
নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ কোমলমতি শিক্ষার্থীদের মেধাবী, সৎ ও যোগ্য করে তোলার জন্য শিক্ষার কোন বিকল্প নেই। শিক্ষা একটি জাতিকে সামনের কাতারে এগিয়ে নিয়ে যেতে অগ্রণী ভূমিকা রাখে। অনেকের মতে, দৌলতপুর উপজেলার সবচেয়ে বেশি দুর্নীতিগ্রস্থ হল উপজেলা শিক্ষা অফিস। শিক্ষা ব্যবস্থাকে সরকার যখন ঢেলে সাজাতে নানামুখি উদ্যোগ গ্রহন করছেন ঠিক এর বিপরীত অবস্থানে রয়েছে দৌলতপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার জয়নুল আবেদিন।
তার উপজেলা শিক্ষা অফিসারের পদকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে তিনি ঘুষ, দুর্নীতি, বদলি বানিজ্যসহ নানা অপকর্ম করে চলেছেন অনায়াসে। সম্প্রতি এই শিক্ষা অফিসার জয়নাল আবেদীন প্রধান শিক্ষক পদে চলতি দ্বায়িত্বে বদলি বানিজ্য ও দূর্নীতি করে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলে জানা গেছে। তবে শিক্ষা অফিসারের এসব অপকর্মে প্রত্যক্ষ সহযোগিতা করে চলেছেন উপজেলার নামধারী চাটুকার কিছু শিক্ষক নেতা। যারা সারাদিন স্কুলের ক্লাস না নিয়ে উপজেলা চত্বরসহ শিক্ষা অফিস ও এর আশপাশে ঘুরঘুর করতে থাকেন। শিক্ষা অফিসারের এসব অপকর্মের কারণে অনেক শিক্ষক ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।
তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, সুচতুর, লোভী, ঘুসখোর, দূর্নীতিবাজ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার জয়নাল আবেদীন ২০১৬ সালের ১৪ মার্চ যোগদানের পর থেকেই প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের নিকট আত্বীয় এমন পরিচয় দিয়ে ধরাকে সরা জ্ঞান না করে কতিপয় শিক্ষক নেতা নামধারী দালাল শিক্ষকদের সহযোগীতায় ঘোষনা দিয়ে ঘুস,দূর্নীতি শুরু করে। একই কর্মস্থলে ৩ বছর পার করে ৪ বছরে চলমান থাকলেও দূর্নীতিবাজ শিক্ষা অফিসার জয়নালের খুটির জোর নিয়ে অফিস পাড়ায় ব্যাপক গুঞ্জন রয়েছে। উপজেলার বিভিন্ন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সিনিয়র সহকারী শিক্ষকদের নিয়ে প্যানেল অনুযায়ী চলতি দায়িত্বে প্রধান শিক্ষক পদে পদোন্নতির ক্ষেত্রে পছন্দের স্কুলে পোষ্টিং দেওয়ার নামে উপজেলার ৫৬ জন সহকারী শিক্ষকের কাছ থেকে মাথা পিছু ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা করে হাতিয়ে নেয় বলে ভুক্তভোগি শিক্ষকরা অভিযোগে জানিয়েছেন। এছাড়া উপজেলার ২১৭টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কাছ থেকে স্লিপের কাজের টাকা থেকে ২ হাজার টাকা করে মোটা অংকের অর্থ আত্বসাৎ করেছেন এই দূর্নীতিবাজ শিক্ষা অফিসার জয়নাল আবেদীন। আর তার এসব কাজে সরাসরি সহযোগীতা করে চলেছেন দৌলতপুর উপজেলার বিভিন্ন ক্লাস্টারের শিক্ষক নামীয় দালাল শিক্ষক নেতারা।
জানা গেছে, উপজেলার বিভিন্ন এলাকার প্রায় ১০/১২ জন শিক্ষক নামীয় দালাল শিক্ষক নেতা প্রতিদিন স্কুলে ক্লাস ফাঁকি দিয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের অফিস কক্ষে নিয়মিত আড্ডা মারে এবং প্রতিদিনের দূর্নীতির ছক তৈরী করে। এসব দালাল শিক্ষক নেতাদের আচার আচরণ ও অত্যাচারে উক্ত অফিসের উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসাররা অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন।
উপজেলার চিলমারী, রামকৃষ্ণপুর, ফিলিপনগর ও মরিচা ইউনিয়নের চরাঞ্চলের অধিকাংশ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ও প্রধান শিক্ষকদের কাছ থেকে প্রতি মাসের বেতন থেকে মোটা অংকের কমিশনের বিনিময়ে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয় এই ঘুষখোর অফিসার জয়নাল আবেদীন। অনেক শিক্ষককে টাকার বিনিময়ে চরাঞ্চল থেকে বদলি করে উপরের দিকে নিয়ে এসেছেন এই কর্মকর্তা। ফলে শিক্ষক সংকটে চরাঞ্চলের ছেলে মেয়েদের লেখাপড়া সংকটের মধ্যে পড়েছে। এ বিষয়ে স্থানীয় একাধিক অভিভাবক ও বিদ্যালয় পরিচালনার কমিটির সভাপতি ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন।
প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকদের মাঝে বদলী বানিজ্য ও চরাঞ্চলে পোষ্টিং দেওয়ার হুমকি দিয়ে প্রায়শঃ বিভিন্ন শিক্ষকের কাছ থেকে জোর পূর্বক চাঁদা আদায়ের ন্যায় ঘুষ আদায় করে থাকেন এই অফিসার নামধারী ঘুষখোর জয়নাল আবেদীন। আর তাকে এ কাজে সরাসরি সহযোগীতা করেন, উপজেলার ৭৯ নং ধর্মদহ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এ কে এম মোস্তফা কামাল ওরফে রিপেল দালাল। উল্লেখ্য এই এ কে এম মোস্তফা কামাল ওরফে রিপেল দালাল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হিসাবে চাকুরিতে যোগদানের পর থেকেই বিভিন্ন শিক্ষকদের বদলী সহ নানা ধরনের সুবিধা পাইয়ে দেয়ার নামে উপজেলা শিক্ষা অফিসে দালালী শুরু করে এবং এক পর্যায়ে সে স্কুলে কোন ক্লাস না নিয়ে স্কুল ফাঁকি দিয়ে সার্বক্ষনিক অফিসে পড়ে থাকে এবং অফিস বয় এর ন্যায় শিক্ষা অফিসারের হুকুম জারি করে এবং কম্পিউটার অপারেটরের হেল্পারী করে থাকে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন শিক্ষক জানান, এই শিক্ষক নামধারী রিপেল দালাল চাকুরীতে যোগদানের পর তার জীবনে কোনদিন ও স্কুলে ক্লাস নেন নাই। সব সময় অফিসে পড়ে থাকে। আর এসব কিছুই সম্ভব হয়েছে দূর্নীতিবাজ শিক্ষা অফিসারদের কারণে।
এই বিষয়ে কুষ্টিয়ার স্থানীয় পত্রিকা সহ বিভিন্ন অনলাইন নিউজ পোর্টালে নিউজ এসেছে।
এ ব্যাপারে শিক্ষা অফিসার জয়নাল আবেদীন তার বিরুদ্ধে সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলে তার বিরদ্ধে অপপ্রচার করা হচ্ছে। আমার বদলীর আদেশ হয়েছে। আমি কোন দুর্নীতির সাথে জড়িত নই।