অনুশীলনে বিষন্নতা, পরীক্ষা নিয়ে প্রশ্ন
বিজয় নিউজ:রোববার সকালেও যথাসময়ে মাঠে অনুশীলনে যোগ দেন টাইগাররা। যথারীতি শুরুতেই খেলোয়াড়দের পাশে হাজির কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে। কিন্তু অনুশীলনে বাংলাদেশ দলের খেলোয়াড়-কোচের বিষন্নতাও ছিল স্পষ্ট। ব্যাঙ্গালুরু থেকে মানবজমিনের স্পোর্টস রিপোর্টার ইশতিয়াক পারভেজ জানান, সাধারণত অনুশীলনের একদম শুরুতেই ব্যাট হাতে খেলোয়াড়দের সঙ্গে ব্যস্ত হয়ে পড়েন কোচ হাথুরুসিংহে। কিন্তু রোববার অনেকটা সময় তিনি মাঠের একপাশে চেয়ারে বিষন্ন মুখে বসে ছিলেন। ঢাকা থেকে ইতিমধ্যে ব্যাঙ্গালুরুতে উড়ে গেছেন সাকলাইন সজীব ও শুভাগত হোম চৌধুরী। রোববার অনুশীলনে দলের সঙ্গে যোগ দেন এ দুই ক্রিকেটার। আগামীকার দেশের পথে বিমানে উঠবেন তাসকিন আহমেদ ও আরাফাত সানি। চেন্নাইয়ের রামাচন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষাগারের মান নিয়ে প্রশ্ন উঠতে দেখা গেছে আগে। আর এবার এখানে বাংলাদেশি পেসার তাসকিন আহমেদের পরীক্ষা প্রক্রিয়া নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। গত ১৫ই মার্চ চেন্নাইয়ে বোলিং অ্যাকশনের পরীক্ষা দিতে যান তাসকিন আহমেদ। আর মাত্র চার দিনের মাথায় ফল জানিয়ে দেয়া হয়। এতে বলা হয়, তাসকিন আহমেদের বোলিং অ্যাকশন অবৈধ। তবে তার বোলিংয়ে কি ত্রুটি পাওয়া গেছে সে বিষয়ে বিষদ জানানো হয়নি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের (আইসিসি) এ সংক্রান্ত প্রেস বার্তায়।
বিসিবি সূত্র জানিয়েছে, ১৫ মার্চের পরীক্ষায় মাত্র ৩-৪ মিনিটের মধ্যে তাসকিনকে ৮-৯টি বাউন্সার দিতে বলা হয়। এর মধ্যে তাসকিনের তিনটি বাউন্সারে অবৈধ অ্যাকশন ধরা পড়েছে। এত অল্প সময়ে অতগুলো বাউন্সার দিতে হলে এ রকম হওয়াটা অস্বাভাবিকও নয়। মূলত এই পরীক্ষার ফলের ওপর ভিত্তি করেই তাসকিনের বোলিং নিষিদ্ধ ঘোষণা করলো আইসিসি। কিন্তু নিয়ম হলো, ম্যাচের যে ডেলিভারিতে অ্যাকশন সন্দেহজনক মনে হয়েছে, পরীক্ষায় সেটাই করতে বলা হবে বোলারকে। সে অনুযায়ী পরীক্ষায় তাসকিনকে বাউন্সার দিতে বলার কথা নয়। চলতি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম রাউন্ডে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে ম্যাচ শেষে তাসকিনের বোলিং অ্যাকশনে সন্দেহ জানিয়ে রিপোর্ট করেন ম্যাচের মাঠের দুই আম্পায়ার। কিন্তু ওই ম্যাচে তাসকিন কোনো বাউন্সারই দেননি! বাউন্সারে তাসকিনের অ্যাকশন নিয়ে সন্দেহ ওঠারও তাই অবকাশ ছিল না ওই ম্যাচে। আইসিসির সিদ্ধান্তে নিয়মের ব্যত্যয় রয়েছে আরও। ‘স্টক ডেলিভারি’ ছাড়া অন্য কোনো ডেলিভারিতে কনুই ১৫ ডিগ্রির বেশি বাঁকা হলেও আইসিসি কোনো বোলারের বোলিং নিষিদ্ধ করতে পারে না বলে জানিয়েছে সূত্র। এক্ষেত্রে বিধি অনুযায়ী আইসিসি ওই বোলারকে শুধু ভবিষ্যতের জন্য সতর্কই করতে পারে। তাসকিনের অ্যাকশন নিয়ে অভিযোগ তার গুড লেংথ অথবা ইয়র্কার বলগুলোর মতো ‘স্টক ডেলিভারি’তে নয় বলেও তার বোলিংয়ের নিষেধাজ্ঞা নিয়ে প্রশ্ন তোলা যায়। দলের কম্পিউটার বিশেষজ্ঞদের মাধ্যমে নেদারল্যান্ডস ম্যাচের ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ করে এসব বিষয়ে আরও নিশ্চিত হন বাংলাদেশ দলের প্রধান কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে। তাসকিনের বোলিং অ্যাকশন নিয়ে প্রশ্ন ওঠার পর কোচের পরামর্শেই আইনজীবীদের শরণাপন্ন হয় বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। আম্পায়ারদের আনা অভিযোগ, রামাচন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষাগারে হওয়া তাসকিনের বোলিং অ্যাকশন পরীক্ষা এবং তড়িঘড়ি আইসিসির চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের যথার্থতা বিবেচনা করে দেখছেন আইনজীবীরা।