
মঙ্গলবার, ৩০ আগস্ট ২০১৬
প্রথম পাতা » দুর্যোগ-দুঘর্টনা | বক্স্ নিউজ | শিরোনাম » দৌলতপুরে পানি বন্দি অর্ধলক্ষ মানুষের দুর্ভোগ-দুর্দশা চরমে
দৌলতপুরে পানি বন্দি অর্ধলক্ষ মানুষের দুর্ভোগ-দুর্দশা চরমে
বিজয় নিউজ :: দৌলতপুর (কুষ্টিয়া) থেকে : ফারাক্কার বিরুপ প্রভাবের ফলে উজান থেকে নেমে আসা পানি পদ্মা নদীতে অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পেয়ে কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়। গত তিন দিন ধরে বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত থাকলেও উপজেলার রামকৃষ্ণপুর ও চিলমারী ইউনিয়নের ৩৪টি গ্রাম পানিবন্দী অবস্থায় রয়েছে। আকষ্মিক বন্যার কারনে রামকৃষ্ণপুর ও চিলমারী ইউনিয়নের ৩৪টি গ্রামের ১১ হাজার পরিবারের অর্ধলক্ষ মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়ে। সেই সাথে বন্ধ হয়ে যায় সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। তবে শনিবার থেকে অস্বাভাবিকভাবে পানি বৃদ্ধি হ্রাস পাওয়ায় কিছুটা স্বস্থি ফিরেছে বন্যা কবলিতদের মাঝে। তবে পশু খাদ্যের চরম সংকট দেখা দিয়েছে। কিছু এলাকায় বিশুদ্ধ খাবার পানিরও সংকট দেখা দিয়েছে। সেই সাথে পানি বন্দি থাকায় মানুষের মধ্যে বিভিন্ন রোগ বালাই দেখা দিয়েছে। গত শনিবার ও রবিবার দুই দিনে রামকৃষ্ণপুর ও চিলমারী ইউনিয়নের বন্যা কবলিতদের মাঝে ২৩ মেট্রিক টন চাল ত্রান সহায়তা হিসেবে প্রদান করা হয়েছে বলে দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. তৌফিকুর রহমান জানিয়েছেন। এছাড়াও বন্যা কবলিতদের মাঝে আরও ত্রান সহায়তা প্রদানের কথা জানিয়েছেন তিনি। গঠন করা হয়েছে ৪টি মেডিকেল টিম।
বন্যা কবলিত এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ফারাক্কা বাঁধের দরজা খুলে দেয়ায় পদ্মা নদীতে উজানের নেমে আসা পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় উপজেলার রামকৃষ্ণপুর ও চিলমারী ইউনিয়নের ৩৭টি গ্রামের মধ্যে ৩৪ টি গ্রামই বন্যা কবলিত হয়েছে। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন দুই ইউনিয়নের অর্ধলক্ষ মানুষ। বাড়ি-ঘরে পানি ঢুকে পড়ার পাশাপাশি তলিয়ে গেছে ১৮’শ হেক্টর জমির উঠতি আউশ ধান ও পাটসহ অন্যান্য ফসল। জলমগ্ন হয়েছে চিলমারী, চরচিলমারী, রামকৃষ্ণপুর, ঠোটারপাড়া, সোনাতলা, চরসোনাতলাসহ ৪টি বিজিবি ক্যাম্প ও অসংখ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। বন্যা কবলিত ভুক্তভোগীরা জানান, এ দুই ইউনিয়নের বেশিরভাগ মানুষ পানি বন্দি অবস্থায় আছেন। কাজ-কর্ম না থাকায় পরিবার পরিজন নিয়ে তাদের দিন কাটছে অর্ধাহারে-অনাহারে। ঠোটারপাড়া গ্রামের বাসিন্দা জামরুল ইসলাম জানান, বন্যার কারনে কাজ না থাকায় তাদের খেয়ে না খেয়ে দিন কাটছে। তাদের মধ্যে বিশুদ্ধ খাবার পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। অনেক এলাকায় পানিবাহিত রোগ-বালাই ছড়িয়ে পড়েছে। মানুষের পাশাপাশি গবাদি পশু ও হাঁস মুরগি নিয়েও মহাবিপাকে পড়েছে ওইসব দুর্গত এলাকার মানুষ। এদিকে রবিবার দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. তৌফিকুর রহমান বন্যার্তদের মাঝে ত্রান বিতরণ করেছেন। এসময় তার সাথে উপস্থিত ছিলেন, দৌলতপুর প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সাইদুর রহমান, রামকৃষ্ণপুর ইউপি চেয়ারম্যান সিরাজ মন্ডল ও চিলমারী ইউপি চেয়ারম্যান সৈয়দ আহমেদসহ বিভিন্ন ওয়ার্ড মেম্বরগন। এছাড়াও বন্যার্তদের বিশুদ্ধ খাবার পানি সরবরাহের জন্য জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।