
মঙ্গলবার, ৭ সেপ্টেম্বর ২০২১
প্রথম পাতা » অপরাধ জগত | অর্থ-বাণিজ্য-কৃষি | কুষ্টিয়ার সংবাদ | খুলনা | জাতীয় সংবাদ | বক্স্ নিউজ | রাজনীতি » প্রভাবশালীদের দখলে কুষ্টিয়া জেলা পরিষদের দুটি খেয়াঘাট, টোলের টাকা হরিলুট
প্রভাবশালীদের দখলে কুষ্টিয়া জেলা পরিষদের দুটি খেয়াঘাট, টোলের টাকা হরিলুট
কুষ্টিয়া: কুষ্টিয়া জেলা পরিষদের কুমারখালী ও খোকসা উপজেলার গড়াই নদীর খেয়াঘাটে প্রায় ২ মাস ধরে ইজারা না হওয়ায় প্রভাবশালীদের দখলে চলে গেছে। মাঝিমাল্লা ও স্থানীয় প্রভাবশালীরা ঘাট ইজারা না নিয়েই ঘাট পারাপারের টোলের টাকা হরিলুট করে চলেছে। এতে করে সরকার প্রতিদিনই হাজার হাজার টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে। এছাড়াও এই সময়ে নির্ধারিত টোলের অতিরিক্ত টোল আদায় করছে আদায়কারীরা । এতে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে পারাপারকারী জনসাধারণ।
জানা গেছে, কুমারখালী ও খোকসা খেয়াঘাট নিয়ন্ত্রণ করে জেলা পরিষদ। নিয়ম অনুযায়ী চলতি বছরের গত ৩০ জুন ঘাটের ইজারার মেয়াদ শেষ হয়। ওই দিনই ঘাট ছেড়ে দেয় ইজারাদাররা। কিন্তু ইজারাদার ছেড়ে গেলেও ঘাট ছাড়েনি মাঝিমাল্লা ও টোল আদায়কারী কর্মচারীরা। তারা প্রতিদিনের আদায়কৃত টোল ভাগবাটোয়ারা করে নিচ্ছেন। তবে এতদিনেও বিষয়টি নজরে আসেনি জেলা পরিষদের।
আরো জানা গেছে, কুমারখালী ও খোকসা খেয়াঘাট দিয়ে প্রতিদিনই ১০ থেকে ১২ হাজার মানুষ ও যানবাহন পারাপার হয়। মানুষ তিন টাকা নির্ধারন করা থাকলেও বর্তমানে নেওয়া হচ্ছে পাঁচ টাকা। মানুষসহ বাই সাইকেল পাঁচ টাকার পরিবর্তে নেওয়া হচ্ছে দশ টাকা। মোটরসাইকেলসহ মানুষের কাছ থেকে দশ টাকার পরিবর্তে নেওয়া হচ্ছে পনেরো টাকা। দুই ঘাট মিলে প্রতিদিনই টোল আদায় হয় ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা।
এবিষয়ে সদ্য বিদায়ী খোকসা খেয়াঘাটের ইজারাদার মোক্তার হোসেন বলেন, গত ৩০ জুন ঘাটের মেয়াদ শেষ হয়েছে। আমি ঘাট ছেড়ে দিয়েছি। কিন্তু বর্তমানে কারা কি করছে তা জানিনা।
সরেজমিন দেখা যায়, ঘাটে পূর্বের ইজারাদারের কর্মচারীরাই টোল আদায় করছেন। এবিষয় টোল আদায়কারীরা বলেন, এখন ঘাটে কোন ইজারাদার নেই। আমরা কর্মচারীরাই টাকা তুলে ভাগ করে নিই।প্রতিদিন ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা তোলা হয়।
বর্তমান খোকসা ঘাটের প্রধান আদায়কারী দুলাল বলেন, ঘাটে ইজাদার নেই। জেলা পরিষদ কিছু বলেনি। লোকজনের পারাপার সচল রাখতে আমরা নৌকা চলমান রেখেছি। যা আদায় হয় তা সবাই ভাগ করে নিই।
কুষ্টিয়া জেলা পরিষদের প্রশাসনিক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহীনুজ্জামান বলেন, ৩০ শে জুন ঘাঁটের মেয়াদ শেষ হয়েছে। কিন্তু পূর্বের ঘাট মালিকরায় সর্বোচ্চ ডাকদাতা হিসেবে টাকা আদায় করছেন। তবে তাদের এখনও কার্যাদেশ হাতে দেওয়া হয়নি।
এবিষয়ে কুষ্টিয়া জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হাজী রবিউল ইসলামের সাথে কথা বললে তিনি জানান, করোনার কারণে ইজারা দিতে বিলম্ব হয়েছে। পূর্বে যারা ইজাদার ছিল তাদেরকে দিয়ে খাস আদায় করা হচ্ছে। তবে পূর্বের ন্যায় বর্তমানে বেশি হারে টোলের টাকা নেয়া হচ্ছে তা আমার জানা নেই। আমার কাছে কেও লিখিত অভিযোগ দিলে আমি আইনগত ব্যবস্থা নিব তাদের বিরুদ্ধে।
তিনি আরোও বলেন, গত বছরের ন্যায় ঠিকাদারেরা এবার বেশি টাকা টেন্ডার দিয়েছে তা প্রায় ৮৬ লক্ষ টাকা সর্বোচ্চ। এত টাকা টেন্ডার দিয়ে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে বেশি টোল আদায় যেন না করতে পারে সে বিষয়ে আমরা আলোচনা করে সমাধান করবো।