
বৃহস্পতিবার, ৩ জুন ২০২১
প্রথম পাতা » অপরাধ চিত্র | আইন- আদালত | জাতীয় সংবাদ | বক্স্ নিউজ | রাজনীতি | রাজশাহী | শিরোনাম » ছোট ভাইয়ের সাথে স্ত্রীর পরকীয়ায় জীবন গেছে ব্যবসায়ীর : পুলিশ
ছোট ভাইয়ের সাথে স্ত্রীর পরকীয়ায় জীবন গেছে ব্যবসায়ীর : পুলিশ
Bijoynews :
পাবনার ঈশ্বরদীতে কাপড় ব্যবসায়ী শাকিল হত্যার সাথে জড়িত নিহত শাকিলের স্ত্রী মিম খাতুন ও ছোট ভাই সাব্বির হোসেনকে আটক করেছে পুলিশ। একইসাথে হত্যার মূলরহস্য উদঘাটন করার দাবি করা হয়েছে পুলিশের পক্ষ থেকে। পুলিশ জানিয়েছে, শাকিল হত্যার নেপথ্যে স্ত্রী ও ভাইয়ের পরকীয়া প্রেম।
বুধবার দুপুরে পাবনার ঈশ্বরদী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এএসপি) ফিরোজ কবির প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, শাকিল হত্যার সাথে তার স্ত্রী ও ছোট ভাই জড়িত থাকার বিষয়টি পুলিশ নিশ্চিত হয়েছে। পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে হত্যার ঘটনা বর্ণনা দিতে গিয়ে এই পুলিশ কর্মকর্তা জানান, ২৮ মে রাত সাড়ে ১০টার দিকে ঈশ্বরদী থানা পুলিশের কাছে সংবাদ আসে যে রূপনগর কলেজপাড়া মহল্লায় আহসান হাবীবের বাড়ির দ্বিতীয় তলার ভাড়াটিয়া শাকিল আহমেদ (৩৫) নিহত হয়েছেন। নিহত শাকিল একই উপজেলার দুবলাচারার (পতিরাজপুর) মো: ইব্রাহিম হোসেনের ছেলে।
তিনি বলেন, শাকিলকে হত্যার রহস্য উদঘাটনে পাবনা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মহিবুল ইসলাম খানের নির্দেশনায় পুলিশ কাজ শুরু করে। বিভিন্ন তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই রহস্য উদঘাটনসহ হত্যায় জড়িত দুই আসামিকে গ্রেফতার করা হয়।
তদন্তকালে জানা যায়, নিহত শাকিলের স্ত্রী মিমের সাথে শাকিলের ছোট ভাই সাব্বিরের পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে। এ ছাড়া শাকিলের সাথে পরিবারের জমিজমা ও পুকুরে মাছ চাষের ভাগাভাগি নিয়ে বিরোধ ছিল। শাকিল একই বাড়িতে অবস্থান করে আলাদাভাবে সংসার করতেন। এরপর শাকিল তার স্ত্রী মিম ও ভাই সাব্বিরের পরকীয়ার বিষয়টি আঁচ করতে পেরে স্ত্রীকে সাব্বিরের সাথে কথা বলতে নিষেধ করেন। কিন্তু সাব্বির গোপনে একটি মোবাইল ফোন মিমকে দেন, যা মিম লুকিয়ে শুধু সাব্বিরের সাথে কথা বলতেন। শুধু তাই নয়, প্রায় সময়ে তারা বাড়ি ফাঁকা পেলে ঘনিষ্টভাবে মিশতেন।
সাম্প্রতিক সময়ে আরো কিছু বিবাদকে কেন্দ্র করে শাকিল গত ১৯ মে স্ত্রীকে নিয়ে ঈশ্বরদীর রূপনগর কলেজপাড়া মহল্লায় আহসান হাবীবের বাড়ির ভাড়াটিয়া হিসেবে উঠেন। এতে মিম ও সাব্বির একে অপরের থেকে কিছুটা দূরে চলে যাওয়ায় তারা উভয়ই শাকিলের প্রতি ক্ষিপ্ত হন ও তাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন বলে পুলিশের দাবি।
প্রেস ব্রিফিংয়ে পুলিশ কর্মকর্তা ফিরোজ কবির বলেন, পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী শাকিলের স্ত্রী মিম ২৭ মে রাত ১০টার দিকে পানির সাথে তিনটি ঘুমের ট্যাবলেট গুড়া করে মিশিয়ে শাকিলকে খাওয়ান। পরের দিন ২৮ মে শাকিল সারাদিন ঘরে ঘুমাতে থাকেন। সাব্বির ওই দিন সন্ধ্যার পর শাকিলের ভাড়া বাসায় গোপনে যান। তখনো শাকিল ঘুমের ওষুধের প্রভাবে খাটের ওপর ঘুমাচ্ছিলেন। তখন সাব্বির ও মিম পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী শোফাসেটের কুশন বালিশ নিয়ে শাকিলের শয়নকক্ষে গিয়ে তাকে ঘুমন্ত অবস্থায় নাকে ও মুখে বালিশচাপা দিয়া শ্বাসরোধে হত্যা করেন।
পুলিশ জানায়, শাকিলকে হত্যার পর বিষয়টি ভিন্নখাতে প্রভাবিত করতে আসামিরা লাশের তার হাত-পা বেঁধে বাইরে দরজার কাছে রেখে ঘরের দরজাটি বাইরের দিক থেকে লাগিয়ে দিয়ে তারা চলে যান।
পুলিশ জানায়, তাদেরকে গ্রেফতারের পর আদালতে মিম স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এই হত্যায় আরো কোনো আসামি জড়িত আছে কি না, তা নিশ্চিত হওয়ার জন্য আসামি সাব্বিরকে চার দিনের পুলিশ রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।