
শনিবার, ৩ অক্টোবর ২০২০
প্রথম পাতা » অর্থ-বাণিজ্য-কৃষি | কুষ্টিয়ার সংবাদ | খুলনা | জাতীয় সংবাদ | বক্স্ নিউজ | রাজনীতি | শিরোনাম » সরকারের বেঁধে দেয়া দাম মানছে না কুষ্টিয়ার মিল মালিক ও খুচরা চাল ব্যবসায়ীরা
সরকারের বেঁধে দেয়া দাম মানছে না কুষ্টিয়ার মিল মালিক ও খুচরা চাল ব্যবসায়ীরা
শামসল আলম স্বপন : প্রশাসনের কড়া নজরদারী, মিল মালিকদের সাথে দফায় দফায় বৈঠক তারপরও চালের দাম কমছে না কুষ্টিয়াতে । সরকারের বেঁধে দেয়া দাম মানছে না কুষ্টিয়ার মিল মালিক ও খুচরা চাল ব্যবসায়ীরা ।
বাজারে চিকন চাল কেজিতে দুই/তিন টাকা ও মোটা সব ধরনের চালেও কেজিতে দুই/তিন টাকা বেড়েছে।
এদিকে মিল গেটে দাম বাড়ায় প্রভাব পড়েছে খুচরা বাজারে। দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন ব্যবসায়ীরাও। এতে নিম্ন মধ্যবিত্ত ও নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া মানুষ পড়েছে অস্বস্তিতে।
খাজানগর মোকামের একাধিক মিল মালিকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ধানের দাম না কমার কারণে চিকন চালসহ অন্যান্য চালের বাজার কেজিতে এক থেকে দুই টাকা বাড়ছে । মিনিকেট চাল কেজিতে দুই / তিন টাকা ও মোটা সব ধরনের চাল কেজিতে দুই/তিন টাকা পর্যন্ত মিল গেটে দাম বেড়েছে। ধানের বাজার বাড়লে চালের বাজার সমন্বয় করতেই এ দাম বাড়ানো হয় বলে জানান মিল মালিকরা। তারা বলেন সরকার চালের দাম বেঁধে দিলেও ধানের দাম বৃদ্ধির কারণে চালের দাম আশানারুপ কমেনি।
লিয়াকত রাইস মিলের মালিক হাজি লিয়াকত হোসেন বলেন, মিনিকেট ধান কিনতে হচ্ছে ১৩০০টাকায় আর কাজলতা ১২০০শ টাকায়। প্রতি মণে ৫০ টাকা বেড়েছে ধানের দাম। সেই কারণে চালের দাম মিল গেটে বেড়েছে। চিকন জাতের মিনিকেট চাল ২৫ কেজির প্রতি বস্তা বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ১৩২০ টাকা থেকে ১৩৩০ টাকা। প্রতি কেজি চালের দাম পড়ছে ৫২.৮০ টাকা, যা খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৫৪ টাকা থেকে ৫৫ টাকা। কোথাও আরও বেশি। এছাড়া কাজললতা ৫০ টাকা, আটাশ ৪৮ থেকে টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।
বাংলাদেশ চালকল মালিক সমিতির সভাপতি আব্দুর রশিদ বলেন, আমরা সরকারের বেঁধে দেয়া দামে চাল বিক্রির চেষ্টা করছি । ধানের দাম বৃদ্ধি ও ক্যারিং খরচের কারণে চালের দাম বেড়ে যাচ্ছে । যে কারণে অনেক মিল বন্ধ হয়ে গেছে ।
শুক্রবার খাজানগর মোকামে মিনিকেট চাল মিল গেটে ৫৩ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে, একই ভাবে কাজললতা ৫০ টাকা, আটাশ ৪৮ টাকায় বিক্রি হয়।
এদিকে খাজানগর মোকামে চালের দাম বাড়লেও মনিটরিং দলকে এখন পর্যন্ত কোনো মিলে অভিযান চালাতে দেখা যায়নি। মনিটরিং জোরদার করা হলে বাজার স্থিতিশীল থাকার পাশাপাশি দামও কমে আসবে বলে মনে করেন অনেকে।
কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক মো: আসলাম হোসেন বলেন, আমরা বাজার মনিটরিং জোরদার করেছি । মিল মালিকদের সাথে দফায় দফায় বৈঠক করছি। কেউ যদি সরকারের বেঁধে দেয়া দামের থেকে বেশী দামে বিক্রি করে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। ধানের দাম বাড়ার অজুহাতে যদি কোনো মিল মালিক অতিরিক্ত লাভ করে থাকলে প্রয়োজনে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে সতর্ক করেন তিনি। তিনি বলেন বাজার মনিটরিং জোরদার করা হয়েছে ।
এদিকে মোটা চালের দাম বাড়ায় সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষের ওপর চাপ চাপ পড়েছে। চালের বাজারে তাদের অতিরিক্ত টাকা ব্যয় করতে হচ্ছে। মিল গেটে চালের দাম বাড়ায় প্রভাব পড়েছে খুচরা বাজারে। পৌরবাজারসহ সব বাজারে চালের দাম কেজিতে দুই থেকে তিন টাকা বাড়িয়ে দিয়েছে। অনেক মিল মালিক ও চাল ব্যবসায়ীর তাদের গোডাউনে বিপুল চাল ও ধান মজুদ করেছে। দাম বাড়ার সুযোগে তারাও কম দামে কেনা চালের দাম বাড়িয়ে দিয়ে বাড়তি ফায়দা লুটে নেয়ার পাঁয়তারা করছে।
এ বিষয়ে জেলা সচেতন নাগরিক কমিটির সভাপতি রফিকুল ইসলাম টুকু বলেন, বছরের একটা সময় আসে যখন মিল মালিকরা হুট করে চালের দাম বাড়িয়ে দেন। তারা দু-এক সপ্তাহে ফায়দা লুটে তারা লাখ লাখ টাকা আয় করে নেন। যার প্রভাব পড়ে সাধারণ মানুষের ওপর। এবারও এমন ঘটনা ঘটছে।
তিনি মনে করেন, কৃষকের কাছ থেকে কম দামে ধান কিনে চাল তৈরি করে রাখেন অনেক মিল মালিক। সুযোগ বুঝে বেশি দামে ছেড়ে দেন। কড়াভাবে মনিটরিং করলে তারা হুট করে বাজারে চালের দাম বাড়বে না।