
মঙ্গলবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২০
প্রথম পাতা » অনিয়ম-দুর্নীতি | অপরাধ জগত | কুষ্টিয়ার সংবাদ | ক্রাইম রির্পোট | খুলনা | জাতীয় সংবাদ | বক্স্ নিউজ | রাজনীতি | শিরোনাম » কুষ্টিয়া এলজিইডি’র এসি অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী কামরুজ্জামান গিলে খাচ্ছে তিন জেলার ঠিকাদারদের কুষ্টিয়া জেলা
কুষ্টিয়া এলজিইডি’র এসি অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী কামরুজ্জামান গিলে খাচ্ছে তিন জেলার ঠিকাদারদের কুষ্টিয়া জেলা
Bijoynews : স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সংস্থা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি’র) কুষ্টিয়া এসি অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী কামরুজ্জামান গিলে খাচ্ছে তিন জেলার ঠিকাদারদের। প্রায়ই তার সঙ্গে ঠিকাদারদের বাক বিতন্ডার কথাও শোনা গেছে। কুষ্টিয়া এলজিইডি’র এসি অফিসটা কয়েক মাসেই তার নিজের পৈত্রিক সংস্থায় পরিণত করে ফেলেছেন, একের পর এক তিনি সকল ঠিকাদরদের জিম্মি করে হরিলুট করে যাচ্ছেন। যে কারনে গত কয়েক সপ্তাহ পূর্বে তাকে কুষ্টিয়া থেকে পাবনাতে স্ট্যান্ড রিলিজ করেছিল ঢাকা প্রধান কার্যালয়। পূণ;রায় প্রধান কার্যালয়ে অর্থ ঢেলে আবার ফিরে আসেন নিজ জেলাতে। এলজিইডি’র বিতর্কিত ও দূর্নীতিবাজ এই নির্বাহী প্রকৌশলীর নিজ পৈত্রিক বাড়ী কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলাতে হওয়ায় তার বিরুদ্ধে ব্যাপক অনৈতিক কর্মকান্ডের গুরুতর অভিযোগ উঠেছে।
খোদ এলজিইডি’র মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পক্ষের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা প্রধানমন্ত্রী, স্থানীয় সরকার পলী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বরাবরে তার বিরুদ্ধে স্বজনপ্রীতি, স্বেচ্ছাচারিতা ও লুটপাটের অভিযোগ তুলে ধরেন। দুই কণ্যা সন্তানের জনক কুষ্টিয়া এলজিইডি’র এসি অফিসের এই নির্বাহী প্রকৌশলী কামরুজ্জামান এলজিইডি ভবনে গড়ে তুলেছেন রাম-রাজত্ব। তার ভয়ে কোন ঠিকাদার এবং অফিসের কোন কর্মরত ব্যক্তি ভয়ে কেউ মুখও খুলতে চান না। কারণ তার একটি কলমের খোচায় বন্দ হয়ে যায় বিল।
তার বিরুদ্ধে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে নিজ নামে ও বেনামে বিভিন্ন ব্যাংকে গচ্ছিত রেখেছে অঢেল নগদ অর্থ। কুষ্টিয়া শহরের পুলিশ লাইনের সামনে নির্মান করেছেন আলিশঅন ৪র্থ তলা বাড়ী, কুষ্টিয়া ছয় রাস্তার মোড়ে ফয়সাল টাওয়ারে ক্রয় করে রেখেছেন দুইটা ফ্লাট, কুষ্টিয়া মিরপুর উপজেলা শহরে গড়ে তুলেছেন আলীশান ২য় তলা ভবন, ঢাকা মিরপুর সাড়ে এগার নম্বরে রয়েছে তিন কাঠার একটি প্লট। এত অর্থ কোথা থেকে আসছে, জানতে সরেজমিনে তদন্তে বেরিয়ে আসে থলের বিড়াল। অফিস সুত্রে জানা গেছে, কুষ্টিয়া জেলা এলজিইডি অফিসের তৃতীয় তলাতে গত বছরের শুরুতে এসি অফিসটি উদ্ভোধন হলে এই দূর্নীতিবাজ কামরুজ্জামান ১লা এপ্রিল ২০১৯ তারিখে প্রথম যোগদান করেন। যোগদান করেই ঠিকাদারদের সাথে শুরু করেন দেন দরবার উৎকোচ না দিলে কাজের নানা অনিয়ম দেখিয়ে রিপোর্ট দাখিল করেন প্রধান কার্যালয়ে। নির্বাহী প্রকৌশলী কামরুজ্জামান কুষ্টিয়া, মেহেরপুর ও চুয়াডাঙ্গা জেলাতে দায়িত্বরত থাকলেও কুষ্টিয়া জেলার এসি অফিসে বসেই ছড়ি ঘুরাচ্ছেন আর বলছেন আমি কোন ঘুষ খাইনা। চুয়াডাঙ্গা ও মেহেরপুর জেলাতে তিনি যান না বলে তথ্য পাওয়া গেছে। তার সাব-এ্যসিসটেন্ট ইঞ্জিনিয়ারদেরকে পাঠিয়ে তথ্য সংগ্রহ করে ঠিকাদারদের সাথে অর্থের মাধ্যমে সমঝোতা করে ভাল রিপোর্ট দাখিল করেন। উৎকোচ না দিলে ঐসকল ঠিকারদারদের বিল আটকিয়ে দেয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ঠিকাদাররা তার বিরুদ্ধে উপরোক্ত সকল দূর্নীতির কথা জানান প্রতিবেদকের কাছে।
তিনি বর্তমান সরকারের উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডকে সর্বসময় বাঁধাগ্রস্থ করে যাচ্ছেন, কারণ তিনি ছাত্র জীবনে বিএনপি’র একজন ছাত্রদল নেতা ছিল, সেই আদর্শকে বুকে ধারন করে দীর্ঘ ২৫ বছর চাকরী জীবনে যে জেলাতে চাকরী করেছেন সেই জেলাতেই উন্নয়নমূলক কাজকে বাঁধাগ্রস্থ করে গেছেন। এখনো তিনি জামায়াতও বিএনপি’র অর্থের যোগানদাতা ও গুপ্তচর হিসাবে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। তিনি নিজেকে সূফী সাধক বলে পরিচয় দেন যে আমি হজ্জ করে এসেছি ঘুষের ধারের কাছে আমি যাইনা। ঘুষ না খেলে তিনি এত অঢেল সম্পদ গড়লেন কিভাবে? অফিস ও ঠিকাদারদের মনে এ নিয়ে নানান প্রশ্ন জেগেছে।
এসকল বিষয়ে তার অফিসে বসে সরাসরি কথা হলে, তিনি সম্পূর্ন অস্বীকার করে বলেন আমি ঘুষ খাইনা, আমি একজন হাজী মানুষ। সম্পদ অর্জনের কথা হলে তিনি স্বীকার করে বলেন, আমি ২৫ বছর চাকরী করেছি এগুলোতো করতেই পারি। তার একটি মেয়ে ঢাকাতে লেখাপড়া করে তাকে প্রতি মাসে ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা দেওয়া লাগে আরেক মেয়ে কুষ্টিয়াতে লেখাপড়া করছেন বলে এটিও তিনি প্রতিবেদককে বলেন। তিনি আরও বললেন, আমার এই এসি অফিসে কোন অর্থের কারবার নেই, টেন্ডার নেই সুতারাং এখানে ঘুষ খাওয়ার প্রশ্নই ওঠেনা, যা লেনদেন হয় সব দ্বিতীয় তলাতে আমি শুধু কাজের মান যাচাই করে রিপোর্ট দাখিল করি।
তার সার্বিক কর্মকান্ড বিবেচনা করে দূর্নীতির সত্যতা পাওয়া যায় যে, সকল ঠিকাদাররা তার কাছে জিম্মি, কাজের মান যাচাই করাই তার কাজ, যে ঠিকাদার মোটা বান্ডিল দিবে তার বিল সবার আগে আসবে, যে দিতে গড়ি মসি করবে তার বিল অতি সহজে আসবেনা।
বিএনপির ক্ষমতা সময় দৌলতপুর উপজেলা প্রকৌশলী হিসেবে বাচ্চু মোল্লা সঙ্গে পার্টনারশিপে ব্যবসা করেছে, ভেড়ামারা উপজেলা প্রকৌশলী হিসেবে শহিদুল ইসলাম এমপি সঙ্গে পার্টনারশিপ এর ব্যবসা করেছে, মিরপুর উপজেলা প্রকৌশলী হিসেবে শহিদুল ইসলামের সঙ্গে পার্টনারশিপ এর ব্যবসা করেছে, প্রথম শ্রেণীর গেজেটেড কোন কর্মকর্তা নিজ জেলাতে পোস্টিং হতে পারবে না চাকুরী বিধিতে এ ধরনের নিয়ম থাকা সত্ত্বেও মিরপুর উপজেলার অধিবাসী হয়েও কিভাবে কুষ্টিয়া জেলা কর্মরত থাকে নির্বাহী প্রকৌশলী পদে জনাব কামরুজ্জামান এটা জনমনে প্রশ্ন।
দূর্নীতিবাজ কামরুজ্জামান নিজ জেলাতে কর্মরত রয়েছে কিভাবে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য প্রধান প্রকৌশলীসহ দুদকের কঠোর হস্তক্ষেপ প্রয়োজন মনে করছে কুষ্টিয়াসহ তিন জেলার সকল কর্মকর্তা কর্মচারী ও ঠিকাদার মহল।