
বুধবার, ৮ জুলাই ২০২০
প্রথম পাতা » জাতীয় সংবাদ | ফটো গ্যালারী | বক্স্ নিউজ | রাজনীতি | রাজশাহী | শিরোনাম » করোনা ও বন্যার কারণে বগুড়া-১ আসনের উপ-নির্বাচনের তারিখ পূণঃ ঘোষনার দাবি বিএনপি প্রার্থীর
করোনা ও বন্যার কারণে বগুড়া-১ আসনের উপ-নির্বাচনের তারিখ পূণঃ ঘোষনার দাবি বিএনপি প্রার্থীর
মিলন আলম বগুড়া : করোনা ও বন্যার কারণে বগুড়া-১ আসনের উপ-নির্বাচনের তারিখ পূণঃ ঘোষনার দাবি করেছে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী একেএম আহসানুল তৈয়ব জাকির। গতকাল মঙ্গলবার বগুড়া জেলা নির্বাচন অফিসে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের বরাবরে বিএনপি নির্বাচনে অংশ গ্রহণ না করা প্রসঙ্গে স্মারক লিপি প্রদান শেষে তিনি এ দাবি করেন।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর স্বাক্ষরিত স্মারক লিপিতে বলা হয়, সারা বিশ্বে করোনা ভাইরাস মহামারি ও ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। বাংলাদেশে সংক্রামন ও মৃত্যুর সংখ্যা দিন দিন আশংকাজনক ভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এছঅড়াও দেশের উত্তরাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। এঅবস্থায় নির্বাচন কমিশন জাতীয় সংসদের দু’টি আসনে আগামী ১৪ জুলাই নির্বাচন অনুষ্ঠানের ঘোষনায় বিএনপি গভীর ভাবে ক্ষুদ্ধ ও স্তম্ভিত। উপ নির্বাচনের ভোট গ্রহনের এই সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণ অযৌক্তিক ও অগ্রহণযোগ্য। নির্বাচন কমিশনের এধরনের পদক্ষেপ জনস্বাস্থ্যের জন্য অত্যান্ত ক্ষতিকর ও হুমকি স্বরূপ। জনস্বাস্থ্যকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব বিবেচনায় বিএনপি এ দুটি উপনির্বাচনে অংশ গ্রহণ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
স্মাবকলিপি প্রদান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আহসানুল তৈয়ব জাকির বলেন, করোনা প্রকোপ এবং ভয়াবহ বন্যার সময় জনগনের কাছে ভোট চাওয়া তামাশার সামিল।
এই আসনের জনগন এখন জীবন নিয়ে ব্যস্ত। তারা করোনার সাথে বন্যা মোকাবেলা করে যাচ্ছে। এই সময় নির্বাচন নিয়ে তাদের কোন মাথাব্যথা নেই। নির্বাচন কমিশন নির্বাচনের তারিখ ঘোষনা করে জনগনের সাথে তামাশা করছে। তিনি বলেন তার নির্বাচনী এলাকার ১৫ টি ভোট কেন্দ্র ইতোমধ্যে পানির নিচে ডুবে আছে। আগামী ৭ দিনে আরও কত কেন্দ্র পানির নিচে যাবে তা কে জানে। এই অবস্থায় কিভাবে ভোট হবে। তিনি ১৪ জুলাইয়ের নির্বাচন স্থগিত করে করোনা এবং বন্যার প্রভাব কমে যাওয়ার পর নির্বাচনের নতুন তারিখ ঘোষনার দাবি জানান। তিনি বলেন, বগুড়া-১ আসন বিএনপির ঘাঁটি এই আসন ছিনিয়ে নিতেই করোনা ও বন্যা’কে উপেক্ষা করে নির্বাচনের সিদ্ধান্ত।
চোরাই ৪টি ইজিবাইক ও ২ মোটরসাইকেল উদ্ধার
বগুড়ার পুলিশী ধারাবাহিক অভিযানে
চোরচক্রের ৮ সদস্য গ্রেফতার
মিলন আলম বগুড়া : বগুড়া জেলা পুলিশের ধারাবাহিক অভিযানে সংঘবদ্ধ আন্তঃজেলা চোরচক্রের ৮ সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ সময় তাদের হেফাজত থেকে উদ্ধার করা হয় ৪টি চোরাই ইজিবাইক ও দুইটি মোটরসাইকেল। গত দুইদিন যাবৎ বগুড়া, রংপুর ও দিনাজপুরে ধারাবাহিক অভিযান পরিচালনা করে বগুড়া জেলা পুলিশের সদস্যরা।
বগুড়া সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হুমায়ুন কবির জানান, গত শনিবার বগুড়া শহরতলীর বড়িয়া বটতলা এলাকা থেকে ভাড়া নেয়া ইজিবাইক কৌশলে চুরি করার সময় ইজিবাইকসহ চোরচক্রের এক দম্পতিসহ ৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের জিজ্ঞাসাবাদে তাদের চক্রের অনেক তথ্য বেরিয়ে আসে। তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে বগুড়ার পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভূঞা’র দিক নির্দেশনায় আন্তঃজেলা চোরচক্রকে গ্রেফতার করতে একটি টিম তৈরি করে মাঠে নামে পুলিশ।
সদর থানার ইন্সপেক্টর অপারেশন্স হাসান আলী দায়িত্ব নিয়ে এস.আই আলমগীর ও এস.আই মুক্তারসহ টিম ৩ দিন ধরে বগুড়া, দিনাজপুর এবং রংপুর জেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানে আন্তঃজেলা ইজিবাইক, মোটরসাইকেল চোর চক্রের ৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়। এসময় তাদের হেফাজত থেকে ৪টি ইজিবাইক ও ২টি ডিসকভার মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়।
সংঘবদ্ধ চোরচক্রের সদস্যরা হলো বগুড়া সদরের গোকুল এলাকার আফসারের ছেলে হামিদ (৪৫), আটাপাড়া এলাকার রশিদের ছেলে শফিকুল (৪৯), বগুড়ার গাবতলি উপজেলার চাকলা এলাকার মৃত সেলিমের ছেলে শাহাদত (৩৮), দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট থানার দামারপাড়া এলাকার মকছেদের ছেলে সাখাওয়াত (৩২), একই এলাকার মজিদের ছেলে কবির (৩০), দিনাজপুর জেলার নবাবগঞ্জ থানার হরিপুর এলাকার শফিকের ছেলে বাবু (৩৩), রংপুর জেলার মিঠাপুকুর উপজেলার হেলেঞ্চা এলাকার মৃত মনসুরের ছেলে আনারুল (৪০), ও রংপুরের পীরগঞ্জের ধল্লাকান্দির মন্তাজের ছেলে তসলিম (৫০)।
এর আগে গত শনিবার নান্নু ও সেলিনা দম্পতি এবং আঃ হান্নানকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এনিয়ে ওই চোরচক্রের ১১ জন সদস্যকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় পুলিশ।
ওসি হুমায়ুন কবির জানান, এই চোরক্রের সদস্যরা দির্ঘদিন ধরে এসব অপকর্মে জড়িত। তারা প্রাথমিক জিঞ্জাসাবাদে স্বীকার করেছে প্রায় ২২টির মত ইজিবাইক তারা চুরি করে বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করেছে। হারিয়ে যাওয়া আরও ইজিবাইক ও মোটরসাইকেল উদ্ধারে পুলিশ মাঠে নেমেছে। উদ্ধার হওয়া ইজিবাইক ও মোটরসাইকেল আদালতের মাধ্যমে প্রকৃত মালিকদের বুঝিয়ে দেয়া হবে।
বগুড়ায় করোনা আক্রান্ত
আরও এক যুবকের মৃত্যু
মিলন আলম বগুড়া ঃ বগুড়া মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে করোনা আক্রান্ত হয়ে নিজামউদ্দীন (২৯) নামে এক যুবক মারা গেছে। গতকাল মঙ্গলবার সকাল সোয়া ৯টার দিকে তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। মোহাম্মদ আলী হাসপাতালের আরএমও ডাঃ খায়রু বাশার মমিন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
যুবকটি বগুড়া শহরের জয়পুরপাড়া এলাকার বাসিন্দা। তিনি মোকামতলায় প্রসাধনী সামগ্রীর ব্যবসা করতেন। নিজাম উদ্দীনের পিতা আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘তার ছেলের হৃদরোগের সমস্যা ছিল। তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ভারত নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনাও ছিল। করোনার কারণে আমরা তাকে ভারতে নিয়ে যেতে পারিনাই।
ডা. খায়রুল বাশার মমিন জানান, মারা যাওয়া নিজাম উদ্দীন গত ২ জুলাই করোনা পরীক্ষার জন্য নমুনা দেন। ৫ জুলাই তিনি করোনা পজিটিভ শনাক্ত হন। প্রচন্ডজ্বর ও তীব্র শ্বাসকষ্ট নিয়ে তিনি গতকাল মঙ্গলবার সকালে হাসপাতালে ভর্তি হন। ভর্তির পরপরই তিনি মারা যান। মরদেহ জীবানুমুক্ত করে দাফনের জন্য পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
বগুড়ায় নতুন করে ৭১
জন করোনা সনাক্ত
মিলন আলম বগুড়া ঃ বগুড়ায় নতুন করে করোনাভাইরাসে সনাক্ত হয়েছেন ৭১ জন। আর সুস্থ হয়েছেন ১৫৫ জন। গতকাল মঙ্গলবার বগুড়ার ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডা. মোস্তাফিজুর রহমান তুহিন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ডা. মোস্তাফিজুুর রহমান তুহিন জানান, সোমবার বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজের পিসিআর ল্যাবে ১৮৮টি নমুনা পরীক্ষার ফলাফলে ৩৫ জন পজিটিভ এবং টিএমএসএস মেডিকেল কলেজের পিসিআর ল্যাবে ১৪৩টি নমুনা পরীক্ষায় ৩৬ জন পজিটিভ হয়েছে। আক্রান্ত ৭১ জনের মধ্যে পুরুষ ৪৮ জন, নারী ২১ জন ও শিশু ২ জন রয়েছে। এরমধ্যে বগুড়া সদরে ৪২ জন, শেরপুরে ১১ জন, গাবতলীতে ৭ জন, শিবগঞ্জে ৪ জন, সারিয়াকান্দিতে ৩ জন, শাজাহানপুরে ২ জন, কাহালুতে ১ জন এবং সোনাতলায় ১ জন।
এ নিয়ে জেলায় মোট আক্রান্ত ৩ হাজার ৪৪৬ জন। সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ১৭৮ জন, মারা গেছেন ৬২ জন ও চিকিৎসাধীন রয়েছেন ২ হাজার ২০৬ জন।
জেলা পুলিশ ও জনপ্রতিনিধিদের সমন্বয়ে
বগুড়ায় নির্মাণাধীন ভবনে জোরপূর্বক বালু,
ইট, সিমেন্ট, রড বিক্রি বন্ধে মতবিনিময়
মিলন আলম বগুড়া : বগুড়ায় নির্মাণাধীন ভবনে চাঁদাবাজি, জোরপূর্বক বালু, ইট, রড সিমেন্ট ব্যবসা বন্ধে জেলা পুলিশ এর সাথে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার সন্ধ্যায় শহরের দত্তবাড়ি তন্ময় কমিউনিটি সেন্টারে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বগুড়ার পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভূঞা।
বগুড়া সদর থানার অফিসার ইনচার্জ হুমায়ুন কবীরের আয়োজনে মতবিনিময় সভায় অংশ গ্রহণ করেন বগুড়া সদর উপজেলা পরিষদ এবং বগুড়া পৌরসভার সকল জনপ্রতিনিধি। সাংবাদিক সঞ্জু রায়ের সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) সনাতন চক্রবর্তী, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবু সুফিয়ান সফিক, বগুড়া পৌরসভার কাউন্সিলর শামসুদ্দিন শেখ হেলাল।
মুক্তআলোচনায় বক্তব্য রাখেন সদর উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ডালিয়া নাসরিন রিক্তা, সদরের ইউপি চেয়ারম্যানদের মাঝে আবু সালেহ নয়ন, মহররম আলী, রাসেল মামুন, কামরুল ইসলাম, শাখারিয়া ইউপি’র কামরুল হুদা উজ্জ্বল । বগুড়া পৌরসভার কাউন্সিলরদের মাঝে সার্জিল আহম্মেদ টিপু, তৌহিদুল ইসলাম বিটু, পরিমল চন্দ্র দাস, আরিফুর রহমান আরিফ, সিপার আল বখতিয়ার প্রমুখ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে পুলিশ সুপার বরেন নির্মাণাধীণ ভবনে চাঁদাবাজি বন্ধে এবং প্রত্যেক্ষ বা পরোক্ষভাবে এর সাথে জড়িতদের দমন করার লক্ষ্যে জেলা পুলিশের পক্ষে কঠোর হুশিয়ারী দিয়ে বলেন দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা এই সমস্যার চিরতরে সমাধানের লক্ষ্যে জনপ্রতিনিধিদের সাথে নিয়ে আগামী ১ মাসের মধ্যে বগুড়াকে চাঁদাবাজ মুক্ত করতে হবে।
ইতিমধ্যে জেলার সকল নির্মাণাধীণ ভবনে জেলা পুলিশের পর্যবেক্ষণের বিজ্ঞপ্তি ঝুলিয়ে দেয়া হয়েছে, যার সুফল পেতে শুরু করেছে সাধারণ জনগণ। তিনি বলেন, অপরাধী ও চাঁদাবাজদের দমনে কাউকে কোন লিখিত অভিযোগ দিতে হবেনা শুধু মাত্র মৌখিকভাবে সুনির্দিষ্ট তথ্য দিলেই জেলা পুলিশ সাথে সাথে তার ব্যবস্থা নেবে। সেই সাথে সাময়িক সময়ের জন্যে যারা অপরাধ ছেড়ে দিয়ে পুলিশের চোখ কে ধুলো দেওয়ার চেষ্টা করছেন তাদেরও তালিকা ধরে ধরে উৎখাত করা হবে।