
বৃহস্পতিবার, ২৫ জুন ২০২০
প্রথম পাতা » অনিয়ম-দুর্নীতি | খুলনা | জাতীয় সংবাদ | বক্স্ নিউজ | শিরোনাম » আর্থিক ভাবে ক্ষতি হওয়ায় গ্রামবাসীর নামে চাঁদাবাজির মামলা, চাঁদার পরিমান জানে না ঠিকাদার!
আর্থিক ভাবে ক্ষতি হওয়ায় গ্রামবাসীর নামে চাঁদাবাজির মামলা, চাঁদার পরিমান জানে না ঠিকাদার!
কুষ্টিয়া প্রতিনিধি: কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার হোসেনাবাদ এলাকায় স্থানীয় সরকার বিভাগের অধীনে বাস্তবায়নাধীন একটি সড়কের সংস্কার কাজে ঠিকাদারের অনিয়মের অভিযোগ তোলায় গ্রামবাসীর বিরুদ্ধে ১৭ জুন মিথ্যা চাঁদাবাজির মামলা দিয়েছে ঠিকাদার ফিরোজ আহাম্মেদ।
ঘটনা টি কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার হোসেনাবাদ এলাকার হলেও এটি এখন জেলার অধিকাংশ জায়গার মুল আলোচনার বিষয়। শুধু কতৃপক্ষের হুমকি তাই না এই ঘটনায় গনমাধ্যমে প্রকাশিত হলে এবং এলজিইডি এর কুষ্টিয়া জেলার প্রধান প্রকৌশলী বরাবর লিখিত অভিযোগের পর এলাকাবাসীর উপর ক্ষিপ্ত হয়ে এলাকার নিরীহ ১৩ জনের নাম উল্লেখ আসামী করে দৌলতপুর থানায় একটি চাঁদাবাজির মামলা দায়ের করেছেন ঠিকাদার ফিরোজ আহাম্মেদ। মামলার কথা জানার পর বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী নিয়ম অনুযায়ী সড়ক নির্মাণ ও গ্রামবাসীর নামে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবীতে ১৯ জুন শুক্রবার মানববন্ধন করেছেন। গত ২১ জুন রবিবার তদন্ত ও প্রতিকার চেয়ে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর সহ বিভিন্ন দপ্তরে অনুলিপি প্রদান করেছে গ্রামবাসী ।
মামলার বিষয়ে টিটু এন্টারপ্রাইজের কর্নধার ফিরোজ আহাম্মেদ ওরুফে টিটুর কাছে মুঠোফনে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন এলাকাবাসী তার আর্থিক ভাবে ক্ষতি করার কারনে এই চাঁদাবাজির মামলা করেছেন তিনি বলে জানান। তার কাছে কত টাকা চাঁদা দাবী করেছিল জানতে চাওয়া হলে চাঁদার পরিমান বলতে পারেনি তিনি। তিনি দাম্বীকতার সাথে বলেন একটি মামলা করতে হলে তো একটা টাকার পরিমান দিতে হয় তাই দিয়েছি। গ্রামবাসী চাঁদা দাবীকরার পরে কেন থানায় অভিযোগ করা হলোনা? আপনি কি আপনার দূর্নীতি ধামাচাপা দিতেই চাঁদাবাজির মামলা করেছেন এমন প্রশ্ন করলে সঠিক কোন উত্তর দিতে পারেননি ঠিকাদার ফিরোজ আহাম্মেদ ওরুফে টিটু। তবে মামলার ব্যাপারে ক্যামেরার সামনে কোন কথা বলতে রাজী হয়নি স্থানীয় থানার পুলিশ।
২০১৯-২০২০ ইং অর্থবছরে গ্রামীণ সড়ক মেরামত ও সংরক্ষন বাবদ বরাদ্দের খাত থেকে এলজিইডি, মথুরাপুর জিসি হোসেনাবাদ ভোকেশনাল সড়কের ১৭৬২ মিটার নির্মান কাজের জন্য ৭২ লক্ষ ৯১ হাজার ৮শ ৭০ টাকা বরাদ্দ দেয় সরকার। যার ভিত্তিতে টেন্ডারের মাধ্যমে চুয়াডাঙ্গার টিটু এন্টারপ্রাইজ নামের একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কাজটি পায়। চুক্তি অনুসারে কাজটি ২৯ ডিসেম্বও ২০১৯ শুরু ১২ মার্চ ২০২০ ইংরেজি তারিখে শেষ করার কথা থাকলেও অভিযোগ আছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের গাফিলতি ও তত্ত¡াবধায়নকারী কর্তৃপক্ষদের উদাসীনতায় কারনে এখনো শেষ হয়নি এর নির্মান কাজ।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, সড়ক নির্মান কাজের প্রাইম কোর্ট এর ৪৮ ঘন্টা পর র্কাপেটিং করার বিধান থাকলেও আগের দিন শ্রক্রবার সন্ধ্যায় ঐ সড়কে প্রাইম কোর্ট করা হয়। এরপর বৃষ্টিতে প্রাইম কোর্ট ধুয়ে গেলেও পরদিন সকালে নতুন করে প্রাইম কোর্ট না করেই নমানের পাথর ও বিটুমিন ব্যবহার করে ঐ সড়কের র্কাপেটিং করা হয়।
প্রাপ্ত তথ্যমতে, বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন বিপিসি’র ৬০-৭০ গ্রেডের বিটুমিন ব্যবহার করার কথা। কিন্তু আগেরদিন রাতে কালো ড্রামের ইরানি বিটুমিন গলিয়ে ঐ সড়কে ব্যবহার করা হয়েছে। বিষয়টি স্থানীয় প্রকৌশলী অফিসের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অদক্ষতা অথবা ইচ্ছাকৃতভাবে না দেখে এড়িয়ে গেছেন। এলাকাবাসী জানায়, ১৬ জুন সন্ধ্যায় ঠিকাদারের নিমানের মালামাল সরিয়ে নিয়ে যায়। এবং পরদিন ১৭ জুন গ্রামবাসীদের নামে এই চাঁদাবাজির মামলা দায়ের করেন।