
বৃহস্পতিবার, ২৫ জুন ২০২০
প্রথম পাতা » অনিয়ম-দুর্নীতি | অপরাধ চিত্র | খুলনা | জাতীয় সংবাদ | বক্স্ নিউজ | রাজনীতি | শিরোনাম » করোনার এই ক্লান্তিকালে অধ্যাপক ডাঃ ইফতেখার মাহমুদ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রত্যন্ত অঞ্চলে মানবিক সহযোগিতা নিয়ে উপস্থিত হচ্ছেন
করোনার এই ক্লান্তিকালে অধ্যাপক ডাঃ ইফতেখার মাহমুদ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রত্যন্ত অঞ্চলে মানবিক সহযোগিতা নিয়ে উপস্থিত হচ্ছেন
Bijoynews : কুষ্টিয়ার কৃতিসন্তান প্রফেসর ডাঃ ইফতেখার মাহমুদ। দীর্ঘ ৪০বছর চিকিৎসা সেবার সাথে জড়িয়ে রয়েছেন। চিকিৎসা সেবাই দেশী ও বিদেশী উচ্চতর ডিগ্রী গ্রহন করেছেন। সরকারী চাকুরীর সুবাদে দীর্ঘ সময়ে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে কর্মরত ছিলেন। তিনি কুষ্টিয়ায় চাকুরীর বড় একটি সময় পার করেছেন। সর্বশেষ কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজের প্রতিষ্ঠাকালীন প্রিন্সিপাল থেকে অবসর নিয়েছেন। নির্লভ, নিষ্ঠাবান কর্মঠ এই চিকিৎসক মানুষটি শিক্ষা জীবনের প্রতিটি স্তরে যেমন মেধার পরিচয় দিয়েছেন তেমনি কর্মজীবনে সব ক্ষেত্রে সাফল্যের দৃষ্টান্ত রেখে গেছেন তিনি।
বর্তমানে অবসরে গেলেও থেমে নেই তার কর্মচাঞ্চল্য। বৈশি^ক করোনার এই ক্লান্তিকর সময়ে তিনি ব্যক্তিগতভাবে জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে মানুষের মাঝে চিকিৎসা সেবা প্রদান করে আসছেন। তিনি করোনা সংকটের প্রথম থেকেই ফেইসবুকে আগ্রহ প্রকাশ করেন টেলি মোবাইলে রোগীদের সেবা প্রদান করার। এসময় তিনি ব্যক্তিগত মোবাইল নম্বরটি পোষ্ট করলে সেখানে ব্যাপক সাড়া ফেলে। তিনি মোবাইলে সমস্যা শুনছেন আর ব্যবস্থা পত্র প্রদান করছেন। এ পর্যন্ত কয়েক হাজার রোগীকে মোবাইলে তিনি চিকিৎসা সংক্রান্ত পরামর্শ দিয়েছেন। করোনার এই ক্লান্তিকাল মুহুর্তে যেখানে চিকিৎসকেরা প্রাইভেট চেম্বার বন্ধ রেখেছেন এবং প্রাথমিক অবস্থায় জনগনের চিকিৎসা সেবা প্রদান বন্ধ রখেছিল ঠিক সেই মুহুর্ত থেকে জেলার বিভিন্ন স্থানে ছুটে গেছেন রোগী দেখতে। তিনি কুষ্টিয়া শহরসহ জেলার বিভিন্ন উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ছুটে যেয়ে সেখানকার গরীব দুস্থ্য মানুষের মাঝে চিকিৎসা সেবা প্রদান করেছেন। করোনা মোকাবিলায় সরকারের পাশাপাশি তিনি নিজ উদ্যোগে জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের মাঝে খাদ্য সামগ্রী নিয়ে হাজির হয়ে অনন্য দৃষ্টান্ত রেখেছেন। জেলার সদর উপজেলা, মিরপুর উপজেলা ও ভেড়ামারা উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় তিনি খাদ্য সামগ্রী এবং নগদ অর্থ বিতরণ করেছেন। তিনি এসময় গ্রামের মহিলা পুরুষ এবং বয়স্কদের চিকিৎসা সেবা প্রদান করেছেন। তাঁর মরহুম পিতা ও মরহুমা মাতার নামে গড়ে তুলেছেন “ইয়াসিন-মাহমুদা স্মৃতি পরিষদ” ইতিমধ্যে এই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ১৯১৩সাল থেকে বিনামুল্যে দুস্থ্যদের চিকিৎসা সেবা, মেধাবী শিক্ষার্থীদের শিক্ষা সহযোগিতা করা, মেধাবীদের সম্বর্ধনা প্রদানের মাধ্যমে উৎসাহ প্রদান, অগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের কাছে দাঁড়ানো, শীতার্থদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরন, শিক্ষার্থীদের মাঝে জ্ঞানের পরিসর ঘটাতে সাধারন জ্ঞানের প্রতিযোগিতার আয়োজন ও পুরস্কৃত করার মত অনেক সেবামুলক কর্মকান্ড পরিচালনা করে আসছেন। রোজার মধ্যেও তিনি তাঁর সেবা কর্মকান্ড চালিয়েছেন। তিনি মানুষের দ্বারে দ্বারে ছুটে চলেছেন চিকিৎসা সেবা আর খাদ্য সামগ্রীর মত সহযোগিতা নিয়ে। তিনি মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে তাদের মনে হাসি ফুটাতেই স্বাছন্দবোধ করেন তাই তিনি মোবাইলে যত সময় না দেন পরিবারের প্রতি তার চেয়েও বেশি সময় দিচ্ছেন রোগীদের চিকিৎসা সেবা প্রদানের মধ্যে দিয়ে। প্রফেসর ডাঃ ইফতেখার মাহমুদ এ প্রসঙ্গে জানান-আল্লাহপাক অনেক সম্মান দিয়েছেন। কর্মক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ন দায়িত্ব পালন করেছি। সরকার আমাকে অনেক দিয়েছে, তাই আমি এখন অবসর জীবনে দেশের মানুষকে দিতে চাই। আমি মানুষকে অর্থ সম্পদ দিতে না পারলেও আমার চিকিৎসা জ্ঞানের মাধ্যমে সেবা দিয়ে তাদের পাশে এসে দাঁড়াতে পারি। তিনি বলেন, আমার জীবনের বাকী সময় আমি মানুষের কল্যানে কাজ করে যেতে চাই। ইতিমধ্যে এই কাজ গুলো শুরু করেছি এতে মানুষরে দারুন সহযোগিতা পাচ্ছি। মোবাইলে মানুষেরা তাদের সমস্যা গুলো শেয়ার করছে আর আমি তাদের উপদেশ দিয়ে তাদের মানষিক ও শারিরীক সমস্যা সমাধানের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। তিনি জানান-এখন চিকিৎসা সেবা অনেক ব্যয় বহুল। অনেকে দরিদ্রতার কারনে চিকিৎসকের নিকট যেতে চাই না। আমি তাদের জন্য বলি আপনারা আমার নিকট আসুন আমি আপনাদের বিনামুল্যে চিকিৎসা সেবা প্রদান করবো। প্রফেসর ডাঃ ইফতেখার মাহমুদ বলেন- আমি প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের চিকিৎসা সেবা প্রদান এবং বিভিন্নভাবে সহযোগিতা নিয়ে তাদের পাশে দাঁড়াতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করছি। আমি মানব সেবা করে আত্মতৃপ্ত। আজীবন মানুষের কল্যানে কাজ করে সৃষ্টিকর্তা মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনই আমার মুল লক্ষ্য আর লক্ষ্যে পৌছতে সকল মহলের সহযোগিতা কামনা করি। সেই সাথে আমার আহবান থাকবে যে যে পেশায় থাকিনা কেন সৃষ্টিকর্তাকে খুশি করতে হলে তাঁর সৃষ্টির প্রতি আমাদের সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে হবে।