
বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০১৯
প্রথম পাতা » অপরাধ চিত্র | জাতীয় সংবাদ | বক্স্ নিউজ | ময়মনসিংহ | শিরোনাম » স্ত্রী ধর্ষণের দায়ে জামাতার বিরুদ্ধে মামলা
স্ত্রী ধর্ষণের দায়ে জামাতার বিরুদ্ধে মামলা
Bijoynews : জামালপুরের মেলান্দহের একটি জমজমাট আনুষ্ঠানিক বিয়ে অস্বীকার করে জামাতার বিরুদ্ধে নাবালিকা কন্যাকে অপহরণ পূর্বক ধর্ষণের অভিযোগে মামলা দায়ের করার চাঞ্চল্যর খবর পাওয়া গেছে।
অভিযোগে জানা গেছে, জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলার নাংলা ইউনিয়নের চারাইলদার গ্রামের উকিল উদ্দিনের কন্যা রহিমা বেগমকে গত ২২ মার্চ আনুষ্ঠানিক ভাবে বিয়ে করেন একই উপজেলার মাহমুদপুর ইউনিয়নের খাসিমারা গ্রামের মজনু মিয়ার পুত্র এনামুল হক। ওই বিয়ের অনুষ্ঠানে বিয়ে নিবন্ধনের কাজ করেন মাহমুদ ইউনিয়নের কথিত সহকারী নিকাহ রেজিষ্ট্রার মেলান্দহের হরিপুর পাথালিয়া গ্রামের মাওলানা আব্দুল গনি।
ওই বিয়ের অনুষ্টানে চারাইলদার গ্রামের বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সালাম বকুল, মেয়ের বাবা মো: উকিল উদ্দিন, মেয়ের নানা মো. খোকা মিয়া এবং খাসিমারা গ্রামের বাসিন্দা ছেলের বাবা মজনু মিয়া, ছেলের ভাই এমদাদুল হক খোকন ও ছেলের বোন নুরুন্নাহারসহ উভয় পক্ষের স্থানীয় শতাধিক নারী পুরুষ উপস্থিত ছিলেন।
এই বিয়ের অনুষ্ঠান শেষে বরপক্ষ আনুষ্ঠানিকভাবে বিয়ের দিনই কনেকে নতুন আত্মীয় স্বজনসহ নিজ বাড়ীতে নিয়ে যান। এরপর বর কনে মিলে কয়েক দফা দুই পক্ষের বাড়ীতেই যাওয়া আসা করেন। একপর্যায়ে এনামুল হক তার স্ত্রী রহিমা বেগমকে সাথে নিয়ে ঢাকার মিরপুরে তার চাকুরীর কর্মস্থলের পাশে একটি বাসা ভাড়া নিয়ে স্বামীস্ত্রী মিলে বসবাস করতে করতে থাকেন।
সেখানে গত ৮ আগষ্ট এনামুল হকের সাথে তার স্ত্রী রহিমা বেগমের পারিবারিক বিষয় নিয়ে ঝগড়া বিবাদ হয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে স্ত্রী রহিমা বেগম মোবাইল ফোনে তার বাবা মজনু মিয়া এবং বড়ভাই মো. মিষ্টারের কাছে মারধোরের মিথ্যা অভিযোগ করেন। এঘটনা জেনে ক্ষিপ্ত হয়ে গত ৯ আগষ্ট মেয়ের বড়ভাই মো. মিষ্টার আলী তার ঘনিষ্ট বন্ধু সাময়িক বরখাস্তকৃত এক পুলিশ কনস্টেবল তাইফুর রহমান সুমনকে সাথে নিয়ে ঢাকায় এনামুল হকের বাসায় যায়।
সেখানে গিয়ে ওই পুলিশ কনস্টেবল মামলার ওয়ারেন্ট থাকার ভয় দেখিয়ে এনামুল হককে গ্রেফতার করে তার স্ত্রীকেসহ ঢাকার বাসা থেকে একটি সাদা মাইক্রো যোগে মেলান্দহের চারাইলদার গ্রামে এনামুল হককের শশুর উকিল উদ্দিনের বাড়িতে নিয়ে আসে।
এরপর পুলিশ কনস্টেবল তাইফুর রহমান সুমন ও মেয়ের বাবা উকিল উদ্দিন মাইরপিট করে ভয়ভীতি দেখিয়ে এনামুল হকের নিকট থেকে একটি ক্রেডিট কার্ড ও নগদ ৩৫ হাজার টাকা কেড়ে নেয়। এছাড়াও পুলিশ তারা জোরপূর্বক এনামুল হকের নিকট থেকে একটি নিকাহ রেজিষ্টারের পাতায় ও ৪টি সাদা ষ্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নিয়ে তাকে ছেড়ে দেয়।
এঘটনার পর এনামুল হক নিজ বাড়ি গিয়ে স্বজনদের কাছে সকল ঘটনা জানিয়ে সকলের পরামর্শ গ্রহণ করেন। পরে ঢাকা থেকে গ্রেফতারের নামে অপহরণ ও তার উপর অত্যাচার নির্যাতনের বর্ণনায় এনামুল হক বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক ও জামালপুরের পুলিশ সুপারের নিকট একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন।
অপরদিকে মেয়ে জামাতা এনামুল হককে গ্রেফতারের নামে ঢাকা থেকে অপহরণের ঘটনা আড়াল করতে চারাইলদার গ্রামের মো. উকিল উদ্দিন স্থানীয় নিকাহ রেজিষ্ট্রারকে ম্যানেজ করে তার মেয়ের জমজমাট আনুষ্ঠানিক বিয়ে অস্বীকার করেন।
পরে বিয়ের ঘটনা অস্বীকার করে জামাতা এনামুল হকের বিরুদ্ধে শাশুরী খালেদা বেগম বাদী হয়ে তার নাবালিকা কন্যাকে অপহরণ পূর্বক ধর্ষণের অভিযোগে গত ১০ অক্টোবর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ জামালপুর আদালতে একটি মামলা দায়ের করেছেন যার নম্বর ১৫৮/২০১৯। বিজ্ঞ আদালত মামলাটি তদন্তের জন্য জামালপুরের সিআইডি পুলিশকে দায়িত্ব দিয়েছেন।
মেলান্দহ থানার ওসি রেজাউল ইসলাম খান জানান, পুলিশ সুপারের নির্দেশে সাময়িক বরখাস্তকৃত পুলিশ কনস্টেবল তাইফুর রহমান সুমনকে আটক করে এনামুল হকের নিকট থেকে স্বাক্ষর নেওয়া সাদা ষ্ট্যাম্প ৪টি উদ্ধার করা হয়েছে এবং কনস্টেবল তাইফুর রহমান সুমনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
এব্যাপারে এনামুল হকের দায়েরকৃত অভিযোগটি পুলিশের মহাপরিদর্শক এর দপ্তর থেকেও তদন্তাধীন রয়েছে। এছাড়াও বিয়ে অস্বীকার করে জামাতার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত অপহরণ পূর্বক ধর্ষণের অভিযোগটি জামালপুরের সিআইডি পুলিশকে তদন্তের দায়িত্ব দিয়েছেন আদালতে