
বুধবার, ২১ আগস্ট ২০১৯
প্রথম পাতা » খুলনা | জাতীয় সংবাদ | পজেটিভ বাংলাদেশ | ফটো গ্যালারী | বক্স্ নিউজ | মন্তব্য প্রতিবেদন / ফিচার | রাজনীতি | শিরোনাম | সম্পাদকীয় » কুষ্টিয়াবাসী তো এমনটিই চায় !
কুষ্টিয়াবাসী তো এমনটিই চায় !
॥ শামসুল আলম স্বপন ॥
এক সময়ের সাপে-নেইলে সম্পর্কের জাসদ-আওয়ামীলীগ আজ রাজনৈতিক প্রয়োজনে এক মঞ্চে । ইতোপূর্বে সরকার পরিচালনায় মহাজোটের শরিক দল জাসদ বেশ গুরুত্ব ভুমিকাও পালন করেছে। কেন্দ্রীয় ভাবে আওয়ামীলীগের সাথে জাসদের সম্পর্কটা ভালো থাকলেও কুষ্টিয়াতে ছিল দা-কুমড়ো সর্ম্পক।
মিরপুর ও ভেড়ামারা আওয়ামীলীগ নেতা-কর্মীদের বক্তব্য তাদের বাদ দিয়ে কিংবা “নৌকা” ছাড়া কুষ্টিয়াতে জাসদ সংসদে যাওয়ার মত জনপ্রিয়তা আজও অর্জন করতে পারেনি। জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু তাঁর দলের নিজস্ব প্রতীক “মশাল” ছেড়ে মহাজোটের প্রতীক “নৌকা” নিয়েই নির্বাচিত হয়েছেন বার বার। আওয়ামীলীগ নেতা কর্মীদের অভিযোগ নির্বাচন কালে হাসানুল হক ইনু আওয়ামীলীগের নেতা-কর্মীদের সাথে যে সুন্দর আচরণ করতেন কিন্তু নির্বাচিত হওয়ার পর তিনি তা বে-মালুম ভুলে যান । শুধু ভুলে যাওয়ায় নয়, তিনি তার দলীয় লোকজনদের দিয়ে আওয়ামীলীগ নেতা-কর্মী-সমর্থকদের উপর চালিয়েছেন নির্যাতনের ষ্ট্রীম রোলার । হামলা,মামলা,খুন-খারাবি কোনটায় বাদ পড়েনি তাঁর নির্যাতনের কর্মসূচি থেকে । উন্নয়ন কর্মকান্ড থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে আওয়ামীলীগকে । পাশা-পাশি নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি যেমন আমলা কৃষি কলেজ, রেডিও সেন্টার স্থাপনসহ বেশকিছু কর্মসূচি তিনি বাস্তবায়ন করতে পারেননি। তাঁর সাথে আওয়ামীলীগের সম্পর্কের দুরুত্ব সৃষ্টি হয় এ সব নিয়ে। এ সব কারণে মিরপুর-ভেড়ামারার অসহায় আওয়ামীলীগ নেতা কর্মীদের একমাত্র কান্ডারী মাহবুব উল আলম হানিফ এমপি’র সাথে সাবেক তথ্যমন্ত্রীর কথাবার্তা বন্ধ হয়ে যায়। পরিস্থিতি এমনটি দাঁড়ায় যে, সতীন সতীনের মুখ দেখলেও দু’নেতা কেউ কারো ছায়া মাড়াতো না।
মন্ত্রী না হয়েও মাহবুব উল আলম হানিফ তাঁর নির্বাচনী এলাকায় যে উন্নয়ন করেছেন তা বিরল ঘটনা । ৪৭ বছরের মধ্যে এত দৃশ্যমান উন্নয়ন অন্য কোন এমপি করতে পারেননি। তাঁর উল্লেখ যোগ্য উন্নয়ন হলো বাইপাস সড়ক,হরিপুর ব্রীজ, মেডিকেল কলেজ,সুইমিং পুল, শিল্পকলা একাডেমি, ইকো পার্ক,পর্যটন কেন্দ্রসহ শত শত স্কুল, কলেজ,মাদ্রাসা এবং রাস্তা- কালভার্ট নির্মাণ করা । যে কারণে কুষ্টিয়া সদর আসনের জনগণ দলমত নির্বিশেষে তাকে শ্রদ্ধা করে ভালোবাসে এবং সমর্থন করে। মিরপুর-ভেড়ামারার মানুষও আশা করে তাদের এমপি মাহবুব উল আলম হানিফের মত জনগণের কল্যাণে নিয়োজিত থাকুক । কিন্তু তাদের সে প্রত্যাশা পুরণ না হওয়ায় তারা হতাশ । মিরপুর-ভেড়ামারা তথা কুষ্টিয়াবাসী মনে করেন হাসানুল হক ইনু ও মাহবুব উল আলম হানিফ যদি এক হয়ে কাজ করেন তা হলে কুষ্টিয়ায় উন্নয়নের জোয়ার বয়ে যেত । কিন্ত শত চেষ্টা করেও তাদের সেই বৈরী সম্পর্কের বরফ গলানো সম্ভব হয়নি।
এই অসম্ভব কাজটি সম্ভব করেছেন কুষ্টিয়ার সুযোগ্য জেলা প্রশাসক মো: আসলাম হোসেন। ঈদের দিন রাতে ডিসি সাহেবের বাসভবনে নৈশ্যভোজে রাজনৈতিক নেতা,সরকারি কর্মকর্তা, সাংবাদিকসহ বিভিন্ন পেশার মানুষের বসেছিল মিলন মেলা । সকলের দৃষ্টি ছিল দুই নেতার দিকে। একই টেবিলে পাশাপাশি ছিটে বসে হাসানুল হক ইনু ও মাহবুব উল আলম হানিফ যখন একে অপরের সাথে হাসি মুখে কথা বলছিলেন তখন সবাই খুশিতে আত্মহারা ।
আমি ওই ঐতিহাসিক ছবি তুলতে গেলে হানিফ ভাই রসিকতা করে বললেন সাংবাদিকদের মাথায় এখন কোন হেডিং ঘুরপাক খাচ্ছে । আমি বল্লাম “কুষ্টিয়াবাসী তো এমনটিই চায় ”।