
শনিবার, ৩০ এপ্রিল ২০১৬
প্রথম পাতা » অনিয়ম-দুর্নীতি | রংপুর | শিরোনাম » বীরগঞ্জে চোরাই মোটর সাইকেল বিক্রির ঘটনায় ওসি-এসআইকে শোকজ নোটিশ ও ৩ সদসের তদন্ত কমিটি গঠন
বীরগঞ্জে চোরাই মোটর সাইকেল বিক্রির ঘটনায় ওসি-এসআইকে শোকজ নোটিশ ও ৩ সদসের তদন্ত কমিটি গঠন
বিজয় নিউজ: মোঃ আবেদ আলী, বীরগঞ্জ (দিনাজপুর) প্রতিনিধি ॥ বীরগঞ্জে চোরাই মোটর সাইকেল বিক্রির ঘটনায় বীরগঞ্জ থানার ওসি মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন এবং গোদাগাড়ী থানার এসআই মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেনকে শোকজ ও অতিরিক্ত জেলা পুলিশ সুপার (ক্রাইম) কে প্রধান করে ৩ সদসের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
বীরগঞ্জ থান সুত্রে জানা গেছে, গত মে/১৪ইং থেকে চলতি ৩০মার্চ/১৬ইং এই থানায় কর্মরত বর্তমানে বদলী হয়ে রাজশাহী রেঞ্জের গোদাগারী থানার এসআই জাহাঙ্গীর হোসেন জেলার অতিরিক্ত জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট এফএম আহশানুল হক ও সোনালী ব্যাংক করপোরেট শাখার এক কর্মকর্তার স্বাক্ষর জাল করে ২৩টি চোরাই মোটর সাইকেল বিক্রি করে। ওই ঘটনায় অতিরিক্ত জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট এফএম আহশানুল হক থানার ওসি মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন বীরগঞ্জ ও এসআই মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন গোদাগারী থানায় শোকজ নোটিশ প্রেরন করেছেন এবং অভিযোগের ব্যাখ্যা সহ সাত দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দেওয়ার নিদের্শ দিয়েছেন। জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট কার্যালয়ের নাজির মোঃ মামুন হোসেন জানান, ম্যাজিষ্ট্রেট ২৩আগস্ট/১৫ইং কর্মস্থলে যোগদান করেন। ওই বছরে ২৫ ডিসেম্বর বীরগঞ্জ থানার ৫টি মোটর সাইকেল নিলামের জন্য তাকে নিযুক্ত করা হয়। এরপর আর কোন মোটর সাইকেল নিলামের নিদের্শ দেওয়া হয়নি। বীরগঞ্জ থানার ওসি মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন
জানান, উপজেলার গান্ডাড়া গ্রামে পূজার অনুষ্ঠান থেকে গত ২৬ মার্চ চৌকিশ্বর গ্রামের পরিমল চন্দ্র রায়ের কালো রঙের বাজাজ ডিসকোভার মোটর সাইকেল চুরি হয়। গত ১৪ এপ্রিল বীরগঞ্জ পৌরসভার সাগর নামের এক মেকারের কাছে দেখতে পান পরিমল। মোটর সাইকেলেটির খোজ নিতে গেলে দেবীপুর গামের বদিউল বলেন, তিনি মোটর সাইকেলটি থানার এসআই জাহঙ্গিীরের কাছে ক্রয় করেছেন এবং নিলামের কাগজ দেখান। মালিকানা নিয়ে দুইজনের মধ্যে হাতাহাতি হয়। পরে থানায় নিলামের কাগজটি মিলিয়ে দেখলে জালিয়াতির বিষয়টি ধরা পড়ে।
পুলিশ জানায়, ঘটনাটি জানাজানি হলে এসআই মোঃ জাহাঙ্গীরের কাছ থেকে মোটর সাইকেল কেনা আরো ২২জন থানায় নিলামের কাগজ যাচাই করারর জন্য গত ২৩ এপ্রিল প্রথমে থানায় পরে অতিরিক্ত জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট গিয়ে জানতে পারেন ২৫ ডিসেম্বর ৫টি মোটর সাইকেল ছাড়া আর নিলামের আদেশ দেওয়া হয়নি। নিলামের কাগজে অতিরিক্ত জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেটের স্বাক্ষর ও আদালতের সিল ব্যবহার করা হয়েছে তা জাল। যে স্মারক ব্যবহার করা হয়েছে সেটি ভূয়া স্মারক। এ ছাড়ারও দিনাজপুর সোনালী ব্যাংক করপোরেট শাখায় মোটর সাইকেল নিলামের টাকা জমা দেওয়ার রশিদটি ব্যবহার করা হয়েছে সেটিও ভূয়া। ওই রশিদে যে কর্মকর্তার স্বাক্ষর ব্যবহার করা হয়েছে তিনি এক বছর আগে বদলী হয়ে অনত্র চলে গেছেন। বিধি মোতাবেক বিড লিস্টে নিলামের মালামালের বিষয়ে থানার জিডি বা মামলা নং-ছিলনা। মোটর সাইকেল ক্রেতাদের নিলামের কাগজ থেকে জানা গেছে, ৩১ ডিসেম্বর-১৭টি, ২৫ ডিসেম্বর-২টি, ২৮, ২৯ ও ৩০ ডিসেম্বর ১টি করে মোটর সাইকেল নিলামে বিক্রি দেখানো হয়েছে। অভিযুক্ত এসআই জাহাঙ্গীর হোসেন মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে আনিত অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, বীরগঞ্জ থানর ওসি একটি ডলারী মামলায় আসামীদের কাছে ৩ লক্ষ টাকা আদায় করে ফাইনাল দিতে বলেন আমি তা না করে চাজর্সীট দিয়েছি সেকারনে ক্ষিপ্ত হয়ে আমার উপর মিথ্যা অপবাদ দিচ্ছেন অথচ তিনি নিজেই অবৈধ ভাবে থানা থেকে মোটর সাইকেল চুরি করেছে। আর এস আই শাহাদত হোসেন ১২শত বোতল ফেন্সিডিল আটক করে ১১শত বোতল চুরি করে এসপি’র কাছে ধরা পরে বিভাগিয় শাস্তি ভোগ করে। ঘটনাটি আমি এসপিকে জানিয়েছি সন্দেহে আমার উপর ক্ষিপ্ত হয়ে কিছু লোকজন লেলিয়ে দিয়েছে। দিনাজপুরে জেলা পুলিশ সুপার সংবাদের সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) মোঃ মিজানুর রহমানকে প্রধান করে ৩সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত চলছে।