
শনিবার, ১৬ এপ্রিল ২০১৬
প্রথম পাতা » বক্স্ নিউজ | রংপুর | শিরোনাম » ৭মাস ধরে বন্ধ থাকা মধ্যপাড়া পাথর খনি শীঘ্রই উৎপাদনের সম্ভাবনা
৭মাস ধরে বন্ধ থাকা মধ্যপাড়া পাথর খনি শীঘ্রই উৎপাদনের সম্ভাবনা
বিজয় নিউজ: মোস্তাফিজুর রহমান সুমন, ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধিঃ দিনাজপুরের মধ্যপাড়া পাথর খনিতে প্রয়োজনীয় আমদানী করা বিদেশী মাইনিং যন্ত্রপাতির ২য় চালান এসে পৌছেছে। যন্ত্রপাতির অভাবে প্রায় ৭মাস ধরে মধ্যপাড়া পাথর খনি শীঘ্রই উৎপাদনের সম্ভাবনা।
গতকাল বৃহস্পতিবার ১৪ এপ্রিল খনি উন্নয়নের জন্য গুরুত্বপূর্ণ রেইজ বোরিং মেশিনটি খনি এলাকায় পৌছিলে খনির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে দ্রুত পাথর উত্তোলন শুরুর আশাবাদ জোরদার হয়। খনি উন্নয়নের জন্য বিদেশ থেকে আমদানী করা প্রয়োজনীয় অধিকাংশ যন্ত্রপাতি ও যন্ত্রাংশের সরবরাহ পাওয়া গেলে তা খনি অভ্যন্তরে স্থাপনের পর যত দ্রুত সম্ভব বন্ধ হওয়া খনি থেকে পাথর উত্তোলনের কাজ শুরু করা সম্ভব হবে বলে জানা যায়। এর আগে গত ৩১ মার্চ বিভিন্ন ব্যাসার্ধের প্রায় ৮ হাজার মিটার হুজ পাইপ এর ১ম চালান এসে পৌছে গেছে।
জানা গেছে, ১৯৯৪ সালে উত্তর কোরীয় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ‘‘নাম নাম” ২০০১ সালের মধ্যে দিনাজপুরের পার্বতীপুরে মধ্যপাড়া কাঠন শিলা খনি বাস্তবায়নের জন্য বাংলাদেশ সরকারের সাথে চুক্তি করে। কিন্তু নির্ধারিত মেয়াদের ৬ বছর পর ২০০৭ সালের ২৫ মে প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ শেষ হয়। ২০১০ সাল পর্যন্ত কোরীয় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের সহয়তায় পেট্রোবাংলা খনি হতে পাথর উত্তোলনের কাজ চালিয়ে যায়। চুক্তি অনুযায়ী প্রতিদিন তিন শিফটে পাথর উত্তোলনের কথা থাকলেও এক শিফটের বেশী পাথর উত্তোলন করা সম্ভব হয়নি। ফলে এটি একটি লোকসানি প্রতিষ্ঠানে পরিনত হয়।
অবশেষে উৎপাদন, রক্ষনাবেক্ষন ও পরিচালনার জন্য বেলারুশের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জার্মানিয়া-ট্রেস্ট কনসোর্টিয়াম (জিটিসি) সাথে ২০১৩ সালে ২ সেপ্টম্বর ১ হাজার ৪শ’ কোটি টাকা মূল্যমানের ৬ বছর মেয়াদি একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তি অনুযায়ী কোরীয় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের রেখে যাওয়া যন্ত্রপাতি দিয়ে তারা নতুন উদ্যোমে পাথর উত্তোলন শুরু করে।
প্রথম দিকে তারা এক শিফটে, পরবর্তীতে দুই শিফটে ও সবশেষে তিন শিফটে প্রতিদিন প্রায় সাড়ে ৪ হাজার থেকে ৫ হাজার মেট্রিক টন পাথর উত্তোলন করতে থাকে। এক পর্যায়ে পুরনো যন্ত্রপাতির কার্যকারিতা হ্রাস পেলে গত ২০১৫ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর থেকে খনির উৎপাদন পুরোপুরি বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান জার্মানিয়া-ট্রেষ্ট কনসোর্টিয়াম (জিটিসি)। এতে খনিতে কর্মরত প্রায় ৭শ’ খনি শ্রমিক বেকার হয়ে পড়েন।
খনি সূত্র জানায়, নতুন করে পূর্ণ মাত্রায় পাথর উত্তোলন শুরু করার জন্য বিদেশ থেকে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি আমদানীর লক্ষ্যে মধ্যপাড়া খনি কর্তৃপক্ষকে ২০১৫ সালের আগষ্ট মাসে পেট্রোবাংলা প্রায় ১শ’ ৬ কোটি টাকা ঋণ প্রদান করে। তারা ঋণ পাওয়ার পর ওই বছরের সেপ্টেম্বর মাসে বিদেশ থেকে ১২৯ বড় যন্ত্রপাতি ও প্রায় ২ হাজার খুচরা যন্ত্রাংশ আমদানীর জন্য ৩৬ প্রোফরমা ইন্ভয়েসের বিপরীতে ১০৬ কোটি টাকা মূল্যমানের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান জিটিসি’র অনুকুলে এলসি (ঋণপত্র) খোলা হয়। এলসি খোলার পর পরই মাইনিং যন্ত্রপাতি সংগ্রহের জন্য দ্রুত কাজ শুরু করে খনির ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান জার্মানিয়া-ট্রেষ্ট কনসোর্টিয়াম (জিটিসি)। ইতিমধ্যে এলসির আওতায় আমাদানীকৃত মালামালের দুটি চালান চট্রগ্রাম বন্দর থেকে খনিতে এসে পৌছেছে।
মধ্যপাড়া পাথর খনির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রকৌশলী মোঃ নওশাদ ইসলাম জানান, পর্যায়ক্রমে গুরুত্বপূর্ণ সব যন্ত্রপাতি এসে পৌছিলে সেগুলো খনি ভূ-গর্ভে বসিয়ে নতুন স্টোপ (শিলা উৎপাদন ইউনিট) উন্নয়ন ও পূর্ণমাত্রায় পাথর উত্তোলন শুরু করা সম্ভব হবে।