
শনিবার, ২০ অক্টোবর ২০১৮
প্রথম পাতা » কুষ্টিয়ার সংবাদ | খুলনা | জাতীয় সংবাদ | নির্বাচন | বক্স্ নিউজ | রাজনীতি | শিরোনাম » কুষ্টিয়া-৪(কুমারখালী-খোকসা) আসন : নৌকা পেলে অনায়াসে নির্বাচিত হবেন সুফি ফারুক
কুষ্টিয়া-৪(কুমারখালী-খোকসা) আসন : নৌকা পেলে অনায়াসে নির্বাচিত হবেন সুফি ফারুক
নিজস্ব প্রতিবেদক,কুষ্টিয়া :
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে কুষ্টিয়া আওয়ামী লীগের সব চেয়ে বড় দুশ্চিন্তা হচ্ছে দলীয় কোন্দল। কুষ্টিয়া ৪ আসনে (কুমারখালী-খোকসা) শাসক দলের মধ্যে সীমাহীন কোন্দালের কারণে নেতা-কর্মীরা শংকিত। স্থানীয় আওয়ামীলীগের সাথে বর্তমান এমপি আব্দুর রউফের চরম বৈরিতা সম্পর্কের কারণে এ আসনে নেতা-কর্মী-সমর্থকরা খুঁজছেন নতুন মুখকে।
কুষ্টিয়া-৪ আসনে ২০০১ সালে বিদ্রোহী প্রার্থীর কারণে আওয়ামী লীগের সুলতানা তরুণ পরাজিত হন। তখন বিদ্রোহী প্রার্থী ছিলেন বর্তমান এমপি আব্দুর রউফ । তিনি ফুটবল প্রতীক নিয়ে আওয়ামীলীগ প্রার্থীর বিপক্ষে নির্বাচন করেন । তখন থেকেই আব্দুর রউফ’র সাথে স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা-কর্মী-সমর্থকদের সম্পর্কেও চিড় ধরে। বলা যেতে পারে বর্তমান এমপি আব্দুর রউফের সঙ্গে দলের প্রভাবশালী নেতাদের এখন দা-কুমড়া সম্পর্ক । এই বিরোধ যদি নির্বাচন পর্যন্ত থাকে তাহলে তার খেসারত আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীকে ভোটের মাঠে দিতে হতে পারে বলে অভিজ্ঞমহলের ধারণা ।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে আওয়ামী লীগের বর্তমান এমপি আব্দুর রউফ, সাবেক এমপি সুলতানা তরুণ, কুষ্টিয়া জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান জাহিদ হোসেন জাফর, কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি,খোকসা উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ সদর উদ্দিন খান, কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামীলীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক সুফি ফারুক সহ অন্তত অর্ধ ডজন প্রার্থী দৌড়ঝাঁপ শুরু করে দিয়েছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তৃণমূল নেতাকর্মীদের বড় একটি অংশ কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামীলীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক সুফি ফারুকের পক্ষে । এলাকাবাসী মনে করে সাধারণ ভোটাদের মধ্যে নির্দলীয় নিরপেক্ষ কমপক্ষে ১০ শতাংশ ভোট রয়েছে সুফি ফারুকের অনুকুলে । এ আসনে আওয়ামীলীগের চরম দ্বন্দ্বের কারণে নেতা-কর্মীরা চাচ্ছেন নতুন মুখ। কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক সুফি ফারুক নৌকার তরুণ প্রার্থী হিসেবে ইতোমধ্যে নেতা-কর্মী ও সাধারণ ভোটারদের মন কেড়েছেন তাঁর রাজনৈতিক ও সামাজিক কর্মকান্ড দিয়ে ।
কুষ্টিয়া-৪ সংসদীয় আসনে ভোটার সংখ্যা ২ লাখ ৭৭ হাজার ৮৭৮ জন। এর মধ্যে কুমারখালীর ভোটারই ১ লাখ ৯৯ হাজার ২৩১ জন। কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক সুফি ফারুকে বাড়ি কুমারখালী উপজেলার বাগুলাট ইউনিয়নের বাঁশ গ্রামে । তার পিতা আবু বকর পিন্টু ছিলেন কুমারখাালী উপজেলা আওয়ামীলীগের প্রভাবশালী নেতা। যে কারণে ১৯৮২ সালে জাসদ গণবাহিনী তাঁকে নির্মম ভাবে হত্যা করে। সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারের সন্তান সুফি ফারুক মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় লালিত জননেত্রী শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন বাস্তবায়নে কুমারখালী ও খোকসা এ দু’টি উপজেলায় বেকার তরুণ/তরুণীদের নিয়ে ব্যাপক কাজ করে অনেক প্রশংসা কুড়িয়েছেন। বলা যেতে পারে তার আচার আচরণ ও কর্মকান্ডে ওই দুটি উপজেলার যুব সমাজ এখন সুফি ফারুকের অন্ধ ভক্ত ।
কুমারখালী উপজেলা আওয়ামীলীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক সুভাষ দত্ত বলেন, কুষ্টিয়া ৪ আসনে এবার যারা মনোনয়ন প্রত্যাশী তাদের অনেকেই সরকারি দপ্তরে দায়িত্বে থাকার কারণে নানা অনিয়ময়ের জন্য জনপ্রিয়তা হারিয়েছে। বর্তমান এমপিসহ তাদের কাউকে মনোনয়ন দিলে আওয়ামী লীগ এ আসন হারাবে তাতে কোন সন্দেহ নেই। এ আসনের মানুষ নতুন মুখ চাচ্ছে । তরুণ প্রার্থীদের মধ্যে সুফি ফারুক এখন সব চেয়ে জনপ্রিয় নেতা। তিনি আরো বলেন, সুদর্শন, সুন্দর ব্যবহার, ক্লিন ইমেজ ও তারকাসুলভ খ্যাতি আছে তার। তাকে দিয়ে সর্বাধিক নির্দলীয় তরুণ ও মহিলা ভোটারদের আকর্ষণ করা সম্ভব। সুফি ছাড়া সকল প্রার্থীই বয়সে প্রবীণ। তারা সবাই বর্তমানে/ইতোপূর্বে এক বা একাধিক দলীয়/সরকারী পদে থাকায়, সঙ্গত কারণে খ্যাতিহানি হয়েছেন। তাদের কাউকে মনোনয়ন দিলে, বাকিদের বিদ্রোহী হবার বা নিষ্ক্রিয় থাকার সম্ভাবনা আছে। সুফির মতো নতুন গ্রহণযোগ্য তরুণকে মনোনয়ন দিলে তার ব্যক্তিত্ব ও ব্যবহারের কারণে সবার কাছে সমাদৃত হবে এবং তিনি সবাইকে সাথে নিয়ে ভোট প্রার্থনা করতে পারবেন।
কুমার খালীর বাসিন্দা বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ কুমারখালী উপজেলা শাখার লিগ্যাল এইডস উপ-পরিষদের সদস্য আলেফা খাতুন বলেন, কুষ্টিয়া ৪ আসনের, ২টি উপজেলার মধ্যে, খোকসা উপজেলার ভোট কুমারখালী উপজেলার এক-তৃতীয়াংশ। এখানে উপজেলা প্রীতি, নদীর এপাড়-ওপাড় প্রীতি ও পারিবারিক ভোট ব্যাংকের প্রভাব আছে। কুমারখালীতে দুটি পরিবারের বৃহৎ পারিবারিক ভোট ব্যাংক রয়েছে। একদিকে সুফি ফারুকের পরিবার, অন্যদিকে বিএনপি’র একটি পরিবার। সুফি ফারুককে প্রার্থী করলে, বর্তমান এমপি আব্দুর রউফ এর বিদ্রোহী হবার সুযোগ থাকবে না। তিনি আরো বলেন সুফি প্রার্থী নতুন হলেও, উক্ত আসনে সংগঠন, বিভিন্ন নির্বাচনী প্রচার ও পরিচালনার দশ বছরের অভিজ্ঞতা রয়েছে তার । তার বর্তমান ইমেজ, বয়স, শিক্ষা, দক্ষতা, অভিজ্ঞতা ও পরিশ্রমের সমন্বয় করলে অন্য প্রার্থীদের চেয়ে তিনি এগিয়ে আছেন। সুফি ফারুক বাংলা-ইংরেজি ভাষায় সাবলীল, যোগাযোগে অভ্যস্থ সুবক্তা ও সুলেখক। বাংলাদেশ ও ভারতবর্ষের ইতিহাস, রাজনীতি, ধর্ম ও সংস্কৃতি সম্পর্কে তাঁর ভালো লেখাপড়া আছে। দীর্ঘ দিন ধরে তিনি টেলিভিশন টকশো সহ দেশের অন্যান্য গণমাধ্যম ও সামাজিক গণমাধ্যমে সরব রয়েছেন। দেশ-বিদেশের গণমাধ্যমে তাঁর পরিচিত লোকজন আছে। তাই তিনি গণমাধ্যম, সামাজিক গণমাধ্যম ও আন্তর্জাতিক ফোরামে দল ও দেশের পক্ষে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখতে পারবেন।
কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি আব্দুস সালাম বলেন, তথ্যপ্রযুক্তিবিদ হিসেবে সুফির দক্ষতা ও অবদান ওই খাতের লোকজনের কাছে স্বীকৃত। তার দক্ষতাকে দল ও জাতীয় স্বার্থে কাজে লাগানো যায় । সুফি আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি পেশাজীবি, দেশ-বিদেশে কাজে অভিজ্ঞ ও বয়সে তরুণ হওয়ায়, বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নেতা সজীব ওয়াজেদ জয় এর কার্যকর সহযোগী হতে পারবেন। তিনি সিআরআই এর সাথে দীর্ঘদিন যাবত কারিগরি সহায়তা করে আসছেন। তিনি আরো বলেন, সুফি সাংস্কৃতিক সংগঠক হিসেবে বড় একটি ফোরামের নেতৃত্ব দিচ্ছেন, যাদেরকে দলের বিভিন্ন সংকটকালীন সময়ে মাঠে পাওয়া গেছে। তাকে দিয়ে শিল্পীদের একটি বড় অংশকে দল ও দেশের স্বার্থে কাজে লাগানো যাবে। সুফি বয়সে তরুণ হলেও, ইতোপূর্বে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের উচ্চপদে
দায়িত্ব পালন করেছেন, নিজেরও সফল প্রতিষ্ঠান আছে। তাই তার সাংগঠনিক ও ব্যবস্থাপনা দক্ষতাকে দল ও দেশের কাজে ব্যবহার করা যাবে। কুমারখালী ও খোকসাবাসী কুষ্টিয়া ৪ আসনে সুফি ফারুকের মত একজন জনপ্রিয় তরুণ নেতা আওয়ামীলীগ থেকে মনোনয়ন পাক এটা উভয় উপজেলাবাসীর প্রত্যাশা।
কুমারখালী উপজেলা চেয়ারম্যান ও কুমারখালী উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুল মান্নান খান বলেন, বর্তমান এমপি আব্দুর রউফ দল এবং জনবিচ্ছিন্ন একজন মানুষ । তিনি নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে দলের সাথে সর্ম্পক ছিন্ন করে বিএনপি জামায়াতকে নিয়ে চলেন । তাকে এবার মনোনয়ন দিলে ক্রেন দিয়েও টেনে তোলা যাবে না। তিনি বলেন এবার অনেক নতুন মুখ মনোনয়ন চাইবেন। তার মধ্যে আমিও আছি। আমি দীর্ঘদিন দলকে সংগঠিত করার কাজ করছি আমাকে মনোনয়ন দিলে নৌকাকে জিতিয়ে আনতে পারবো ইনশাল্লাহ।
কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামীলীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক সুফি ফারুক বলেন আমি দীর্ঘ দিন ধরে খোকসা-কুমারখালীর যুব সমাজকে বেকারত্ব ঘোচানোর জন্য বিভিন্ন কর্মসুচি বাস্তবায়ন করে আসছি। জনগণের পাশে থেকে দলকে এগিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছি। আশা করছি দল আমাকে এবার মনোনয়ন দেবে। এ আশা নিয়েই আগামী নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার জন্য কাজ করে যাচ্ছি। এই অবস্থায় দল যদি আমার ওপর আস্থা রাখে, তাহলে জনগণই আওয়ামী লীগকে খোকসা-কুমারখালী আসন উপহার দিতে সক্ষম হবে। তথ্যসুত্র : দৈনিক আমাদের সময় ।