
শুক্রবার, ২৭ অক্টোবর ২০১৭
প্রথম পাতা » ঢাকা | বক্স্ নিউজ | শিক্ষা সংবাদ | শিরোনাম » গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় গোপালপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে জরাজীর্ন ভবনে পাঠদান : ছাত্র-ছাত্রীরা চরম ভোগান্তিতে
গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় গোপালপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে জরাজীর্ন ভবনে পাঠদান : ছাত্র-ছাত্রীরা চরম ভোগান্তিতে
গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি : গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় গোপালপুর করিমুন্নেছা উচ্চ বিদ্যালয়ে জরাজীর্ন ভবনে চলছে পাঠদান এতে করে ওই বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের ভোগান্তি চরমে উঠেছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ১৯৬৭ইং সনের ১ জানুয়ারি প্রতিষ্ঠিত নি¤œ মাধ্যমিক বিদ্যালয়টি ১ জানুয়ারি ১৯৭৩ইং তারিখে মাধ্যমিক বিদ্যালয় হিসাবে পাঠদান শুরু করে এলাকাকে আলোকিত করলে ও বিদ্যালয়টি নিজেই রয়ে গেছে অন্ধকারে। বিদ্যালয়টিতে বর্তমানে ৬ষ্ঠ থেকে ১০ম শ্রেনী পর্যন্ত মোট ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা প্রায় ৫০০জন। এদের জন্য নেই পর্যাপ্ত শ্রেনী কক্ষ, বসার জন্য নেই বেঞ্চ, নেই খেলাধুলার জন্য প্রশস্ত মাঠ। কোন পাবলিক পরীক্ষার সময় এলে ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়মিত ক্লাস বন্ধ রেখে পরীক্ষা নিতে হয়। জরাজীর্ন টিনসেড ভবন ভেঙ্গে যে কোন সময় ঘটতে পারে বড় ধরনের দূর্ঘটনা। এই বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা জেএসসি ও এসএসসি পাবলিক পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করলেও পাঠদানের জন্য শ্রেনী কক্ষের স্বল্পতা অবর্ননীয়। বিদ্যালয়টি খেলাধুলায় উপজেলা পর্যায়ে বিভিন্ন পুরস্কার পেয়ে আসলেও ছাত্র-ছাত্রীদের খেলাধুলার জন্য প্রশস্ত মাঠের ব্যবস্থা নেই।
ওই বিদ্যালয়ের ৬ষ্ট শ্রেনীর শিক্ষার্থী নাসিম খান, সাকিব খান, নবম শ্রেনীর শিক্ষার্থী রাশিদা খানম, নাসরিন খানম, সপ্তম শ্রেনীর শিক্ষার্থী আলফারাহ, করিমন আক্তারসহ শতাধিক ছাত্র-ছাত্রী দু:খ প্রকাশ করে এই প্রতিবেদককে বলে, আমরা এতগুলো ছাত্র-ছাত্রী এই স্কুলে লেখাপড়া করি, আমাদের দক্ষিন পাশের ভবনটি চার তলায় উন্নীত করলে শ্রেনী কক্ষের স্বল্পতা কমত। স্কুলে ঢোকার মূল ফটকের রাস্তাটিও খুব সরু, সকালে বিদ্যালয়ে ঢোকার সময় ও ছুটির সময় একসঙ্গে বের হতে অসুবিধা হয়। বড় মাঠ নেই বিধায় আমরা অবসর সময়ে খেলাধুলা ও করতে পারিনা।
বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও সাবেক উপজেলা পরিষদ ভাইস চেয়ারম্যান এ কে এম আমিনুজ্জামান খাঁন মিলন বলেন, এ বিদ্যালয়টিতে বর্তমানে ৬ষ্ট থেকে ৮ম শ্রেনীর জন্য সরকার অনুমোদিত একটি করে শ্রেনী শাখা থাকলেও নবম ও দশম শ্রেনীর পাঠদানের জন্য কোন শ্রেনী কক্ষ নেই। গত ১৩ আগষ্ট ২০১৬ইং তারিখে প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব শুভ উদ্ভোধন করেন। ১তলা বিশিষ্ট উক্ত ভবনটি ৪তলা ফাউন্ডেশনে প্রস্তুত, এই ১তলা বিশিষ্ট ভবনটিকে ৪ তলা বিশিষ্ট করা হলে ছাত্র-ছাত্রীদের দূর্ভোগ নিরশন হত বলে আশাবাদ ব্যাক্ত করেন তিনি।
বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচনী এলাকা কোটালীপাড়া হওয়ায় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক চিত্ত রঞ্জন মন্ডলসহ এলাকাবাসী ওই ভবনটিকে নির্মানের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টি কামনা করেছেন।
গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরে বানিয়ারচর বাজারের নাম বউ বাজার
গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি : বউ বাজারে চা বিক্রি করছেন একজন নারী। এ বাজারের ক্রেতা ও বিক্রেতাদের অধিকাংশই নারী। তাঁরা এলাকার গৃহিণী। এ জন্য এ বাজারের নাম করন হয়েছে বউবাজার নামে। গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলায় বানিয়ারচরে এই বাজারটি অবস্থান। প্রায় ৩০ বছর আগে এই বউ বাজারের যাত্রা শুরু হয়।
এ বিষয়ে বাজারের দোকানদার শান্তনু বৈরাগি সাংবাদিকদের বলেন, আগে লোকজন বানিয়ারচর থেকে প্রায় দেড়/দুই কিলোমিটার দূরে জলিলপাড় বাজারে কেনাকাটা জন্য যেত। বিগত ১৯৮৮ সালের ঘটনা। একদিন জলিলপাড়ের বাসিন্দাদের সঙ্গে বানিয়ারচরের লোকজনের ঝগড়া বিবাদ বাধে। এরই জের ধরে জলিলপাড়ের লোকজন হুমকি ও ঘোষনা দেয় যে বানিয়ারচরের কেউ জলিলপাড় বাজারে ব্যবসা বা কেনাকাটা করতে এলে তাঁকে বেঁধে রাখা হবে। এরপর বানিয়ারচরের বাসিন্দারা জলিলপাড় বাজারে যাওয়া বন্ধ করে দেন। এর কিছুদিন পর থেকেই বানিয়ারচরে বসে এই বউবাজার।
নাম কেন বউ বাজার? এই বাজারের পানের দোকানি দয়মন্তী বৈরাগী বলেন, ঘরের পুরুষেরা সকালে কাজে চলে যান। কেউ যান ক্ষেত খামারে আবার কেউ বা অফিসে। সকালের রান্নাবান্নার পর গৃহিণীদের হাতে তেমন কাজ থাকে না। তাই তাঁরা এই বাজারে সবজিসহ নানা পণ্য বিক্রি করতে আসেন। কিনতেও আসেন অন্যান্য গৃহিনীরা। নারীরাই ক্রেতা আবার নারীরাই বিক্রেতা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, এখানে স্থায়ী দোকান রয়েছে অন্তত ১৫০টি। বেশির ভাগ দোকানের বিক্রেতাই নারী। তবে নিজেদের কাজ শেষ করে তাঁদের স্বামীরাও সহযোগিতার হাত বাড়ায়। দুধ, মাছ, শাক-সবজি নিয়ে প্রতিদিন সকালে ও বিকেলে তিন শতাধিক বিক্রেতা এই বাজারে আসেন। তবে এখানে মাছ বা মাংস বিক্রির কাজ নারীরা করেন না। এটি পুরুষদের জন্যই বরাদ্দ।
বউ বাজারের চা বিক্রেতা শিলা মন্ডল বলেন, ১৫ বছর ধরে বাজারে চা বিক্রি করছি। প্রায় সবাই নারী। সবই তো চেনা মুখ, এ কারণে আমাদের কখনো কোনো সমস্যা হয় না। আমরা ভালোই আছি।
বাজারের আরেক বিক্রেতা ডলি রায় প্রতিদিন সকাল ও বিকেলে এখানে রুটি বিক্রি করেন। তিনি বলেন, রুটির সঙ্গে ডিম ভেজে দিই। অনেকেই তৃপ্তি সহকারে খায়। দেখেও ভালো লাগে। এই বাজারে ব্যবসায়ীদের একটি সমিতিও রয়েছে। নাম ‘বউবাজার বণিক সমিতি’। তবে সমিতির কর্মকর্তারা বেশির ভাগই পুরুষ।
বণিক সমিতির সভাপতি দীপংকর মহন্ত বলেন, আমরা সবাই সবাইকে চিনি ও জানি। তাই বেচা-কেনায় কোনো সমস্যা হয় না। পুরুষেরা সকালে মাঠের কাজে চলে যান। এক বেলা মজুর খেটে একজন পুরুষ আয় করেন ২০০ টাকা। তাঁর বাড়ির উৎপাদিত সবজি ও গরুর দুধ নিয়ে তাঁর স্ত্রী এই বাজারে আসেন। এতে প্রতিটি পরিবারই আর্থিক ভাবে স্বচ্ছল ও লাভবান হচ্ছে। বাজারটি ক্রমেই জমজমাট হয়ে উঠছে।
জলিলপাড় ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি চেয়ারম্যান অখিল বৈরাগী বলেন, বাজারে টিউবওয়েল, শৌচাগারসহ যে সব সমস্যা রয়েছে সে গুলো সমাধানের উদ্যোগ নেওয়া হবে। তাঁর প্রত্যাশা এই এলাকায় নারীদের উদ্যোগ অব্যাহত থাকবে। সব কটি পরিবার আরও স্বচ্ছল হবে। সুখে-শান্তিতে তাঁদের দিন কাটবে। বাজারের নাম বউবাজার। তবে বউদের পাশাপাশি বরদেরও অংশ গ্রহণ আছে। বর-বউ মিলেই জমজমাট বউ বাজার।
গোপালগঞ্জে টুঙ্গীপাড়ায় স্ত্রীকে আগুনে পোড়ানোর মামলা
দীর্ঘ ৩ বছর অতিবাহিত হতে চললেও সঠিক বিচার পাচ্ছে না ভুক্তভোগী পরিবার
গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি : গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় স্ত্রীসহ তিন জনকে আগুনে পুড়িয়ে মারার মামলা দীর্ঘ প্রায় ৩ বছর অতিবাহিত হতে চললেও সঠিক বিচার পাচ্ছে না ভুক্তভোগি মোঃআলতাব মোল্লা ও তার পরিবার।
২০১৪ সালের ২৮ শে মার্চ আনুমানিক রাত আড়াইটার দিকে ফরিদপুর জেলার সালতা উপজেলার চন্ডিবর্দী গ্রামের মৃত সাত্তার মোল্লার ছেলে পাষন্ড লুৎফর মোল্লা ওরফে মান্দার মোল্লা তার স্ত্রী ও দুই শ্যালিকাকে নির্মম ভাবে পুড়িয়ে মারে। কিন্তু দীর্ঘ ৩ বছর অতিবাহিত হওয়ার পরও কোনো সঠিক বিচার পাচ্ছে না ওই ভুক্তভোগী পরিবারটি।
এ ব্যাপারে আলতাব মোল্লার সাথে কথা হলে তিনি বলেন,আমার মেয়ে কুলসুম (১৮) মোবাইলে লুৎফর মোল্লা ওরফে মান্দারের সাথে পরিচয় হয় এবং তাদের বিবাহ হয়। কিন্তু বিবাহের পর আমার মেয়ে শ্বশুর বাড়ি যায় নাই তবে জামাই মাঝে মাঝে আমাদের এখানে আসত।একদিন মান্দার আমার মেয়ে কুলসুমকে ঘুমের ঔষধ খাইয়ে তার গলার সোনার হার, কানের দুল ও পায়ের নুপুর নিয়া পালিয়ে যায় পরে এই নিয়ে মেয়ের সাথে মনোমালিন্যের কারনে কুলসুম তাকে ডিভোর্স দেয়। এর পর থেকে তার স্বামী তাকে মোবাইলে নানা রকম হুমকি দিতে থাকে।
তিনি আরো বলেন, ২০১৪ সালের ২৮ শে মার্চ রাত আনুমানিক আড়াইটার দিকে মৃত সাত্তার মোল্লার ছেলে লুৎফর মোল্লা ওরফে মান্দার, নুর মোহাম্মদ, ফারুক মোল্লা, মনু শেখের ছেলে জামাল শেখ, সাত্তার মিয়ার ছেলে তারা মিয়া, কেরামত গাজীর ছেলে রুবেল গাজী মৃত সোবহান শেখের ছেলে কবির শেখ, কামরুল শেখের ছেলে সুমন শেখ,সুবল কর্মকারের ছেলে দেবদাস কর্মকার মিলে সুকৌশলে ঘরের মধ্যে প্রবেশ করে কুলসুম, স্বর্না, সাথীর শুয়ে থাকা অবস্থায় পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয় সে সময় তাদের চিৎকারে এলাকাবাসী টর্চে লাইটের আলোতে উল্লেখিত ব্যাক্তিদের পালিয়ে যেতে দেখে। এ সময় কুলসুম বাচার জন্য বাড়ির পাশে খালের মধ্যে ঝাপিয়ে পড়ে ও স্বর্না ও ভাতিজি সাথীর গায়ে আগুন জ্বলতেছিল। এতে কুলসুমসহ ৩ জনের শরীরের বিভিন্ন স্থান আগুনে ঝলসে যায়। এরপর আমরা কুলসুমসহ ৩ জনকে গোপালগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করি কিন্তু ডাক্তার তাদের অবস্থা আশংকাজনক দেখে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বার্ন ইউনিটে পাঠায়।
তিনি সাংবাদিকদের প্রশ্ন করে বলেন, গরীবদের কি সঠিক বিচার পাওয়ার অধিকার নেই ?। কয়েক বছর যাবত আদালতে চক্কর কেটেও সঠিক বিচার পাইনি। আসামীরা এখনো রয়েছে ধরাছোয়ার বাইরে। আমি শুধুমাত্র ন্যায় বিচার চাই। পাষন্ড লুৎফর মোল্লা ওরফে মান্দারসহ যারা আমার মেয়েদের নির্মম ভাবে হত্যা করেছে তাদের কঠোর শাস্তির দাবী জানাচ্ছি।
ওই সময় দেশের বিভিন্ন জাতীয় ও আঞ্চলিক পত্রিকা ও টিভি চ্যানেলে সংবাদটি প্রকাশিত ও প্রচারিত হলেও ভুক্তভোগী পরিবারটি কোনো সঠিক বিচার পায়নি। ওই পরিবারটি যাতে সঠিক বিচার পেতে পারে সে ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী, আইন মন্ত্রী, স্বরাষ্ট মন্ত্রীসহ উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছে এলাকার সাধারন মানুষ।