
বৃহস্পতিবার, ১২ অক্টোবর ২০১৭
প্রথম পাতা » অপরাধ জগত | জাতীয় সংবাদ | বক্স্ নিউজ | রাজশাহী | শিরোনাম » বগুড়ায় পাসপোর্ট করতে এসে ৩ রোহিঙ্গা পুলিশ হেফাজতে
বগুড়ায় পাসপোর্ট করতে এসে ৩ রোহিঙ্গা পুলিশ হেফাজতে
এম নজরুল ইসলাম, বগুড়া জেলা প্রতিবেদক : পাসপোর্ট করার জন্য রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে বগুড়ায় এসেছে শিশুসহ তিন রোহিঙ্গা। পুলিশ তাদেরকে আটক করে থানা হেফাজতে রেখেছে। বৃহস্পতিবার সকালে বগুড়া সদর থানা পুলিশ শহরের সাতমাথা থেকে শিশু সন্তান সহ এক নারী রোহিঙ্গাকে আটক করে। এরআগে বুধবার বিকেলে বগুড়া পাসপোর্ট অফিস থেকে হাজেরা নামের এক রোহিঙ্গা নারীকে আটক করা হয়েছিল।
পুলিশ জানিয়েছে, হাজেরা নামের রোহিঙ্গা নারী বুধবার বিকেলে পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে ফরমের উপর বাংলায় শুধু হাজেরা লিখে পাসপোর্ট করার জন্য জমা দিলে অফিসের লোকজনের সন্দেহ হয়। এসময় তারা পুলিশে খবর দেয়। বগুড়া সদর থানার পুলিশ তার সাথে কথা বলার চেষ্টা করে। তবে হাজেরা কোন কথাই বলেনি। সে নিজেকে বোবা হিসেবে জাহির করার চেষ্টা করে। পুলিশ তার কাছে জাতীয় পরিচয় পত্র চাইলে, সে আকারে ইঙ্গিতে জানায় তার জাতীয় পরিচয় পত্র নেই। একপর্যায়ে পুলিশ নিশ্চিত হয় সে রোহিঙ্গা। ২২ বছর বয়সী বিবাহিত এই মহিলার একটি সন্তান রয়েছে। পুলিশ তাকে আটক করে থানা হেফাজতে নেয়। পরে হাজেরার মা আমেনা এবং ওসমান গনি নামে হাজেরার সন্তানকে বগুড়া শহরের সাতমাথা থেকে আটক করে তাদের হেফাজতে নেয় পুলিশ।
আটককৃতরা পুলিশের কাছে স্বীকার করে বলেছে, তারা পাসপোর্ট করার জন্য রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে বগুড়ায় এসেছে। তারা জেলার দুপচাঁচিয়া থেকে একটি ভুয়া জন্মসনদ সংগ্রহ করেছে। দুপচাঁচিয়ার জনৈক এক দালাল তাদেরকে পাসপোর্ট করে দেওয়ার জন্য বগুড়ায় নিয়ে আসে। তবে সেই দাললের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছেনা। পুলিশ তাকে ধরার চেষ্টা করছে। বগুড়া সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক (ওসি) এমদাদুল হক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
বগুড়ায় হরতালে মাঠে নেই জামায়াত, গ্রেফতার ২৪
বগুড়া জেলা প্রতিবেদক : জামায়াতের আমির মকবুল আহমদ কেন্দ্রীয় নেতাকর্মীদের গ্রেফতার ও রিমান্ডে নেয়ার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার সকাল-সন্ধ্যা হরতালের ডাক দিয়ে বগুড়ায় মাঠে নেই জামায়াত। হরতালের ডাক দেয়ার পরপরই গতকাল বুধবার গা-ঢাকা দিয়েছে জামায়াত ও ছাত্র শিবিরের নেতাকার্মীরা। প্রতিদিনের মতোই বৃহস্পতিবার ভোর থেকেই বগুড়া সদরসহ জেলা সবকটি উপজেলা শহর এবং সবগুলো বাজারে যানবাহন চলাচল শুরু করে। বেলা হবার সাথে সাথে খুলেছে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, ব্যাংক, বীমা, অফিস, আদালতসহ স্থানীয় রুটগুলোতে সকাল থেকেই যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। এদিকে, হরতাল ঠেকাতে জেলার বিভিন্নস্থানে অভিযান চালিয়ে জামায়াত নেতা উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান সহ ২৪ জন জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বগুড়ার চারমাথা কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল ও ঠনঠনিয়া আন্ত:জেলা কোচ টার্মিনাল থেকে সিডিউল অনুযায়ী যাত্রবাহী বাসগুলো ছেড়ে যাচ্ছে। স্থানীয় ও দূরপাল্লার মালবাহী ট্রাকগুলোও প্রতিদিনের মতো চলাচল করছে। বগুড়া রেলওয়ে স্টেশন থেকেও সিডিউল অনুযায়ী ট্রেনগুলো ছেড়ে যায়। জেলার কোথাও হরতালের প্রভাব পড়েনি ও পিকেটার দেখা যায়নি। সক্রিয় অবস্থানে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহীনির সদস্যরা। জেলার বিভিন্ন থানার পুলিশ পরিদর্শক (ওসি) মুঠোফোনে জানিয়েছেন, গতরাতে পুলিশের বিশেষ অভিযানে জামায়াত সংশ্লিষ্ঠ ২৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এরমধ্যে সারিয়াকান্দি থানায় জামায়াত নেতা ও উপজেলা চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম ফারুকী, বগুড়া সদর থানায় ৩জন, শিবগঞ্জ থানায় ৫জন, আদমদীঘি থানায় ২জন, দুপচাঁচিয়া থানায় জামায়াত নেতা শাহাদতসহ ২জন, নন্দীগ্রাম থানায় ৬জন ও শাজাহানপুর থানায় ৫জনকে গ্রেফতার করে। তবে শেরপুর, ধুনট, গাবতলী ও সোনাতলা থানায় জামায়াত সংশ্লিষ্ঠ কাউকেই গ্রেফতারের তথ্য পাওয়া যায়নি।
নন্দীগ্রামে যৌতুক না পেয়ে স্ত্রীকে তালাক, দ্বিতীয় বিয়ে করলো স্বামী
বগুড়া জেলা প্রতিবেদক : বগুড়ার নন্দীগ্রামে যৌতুক না পেয়ে দুই সন্তানের জননী এক গৃহবধুকে পিটিয়ে পিতার বাড়ি পাঠিয়ে দিয়ে স্ত্রীর অনুমতি ছাড়াই দ্বিতীয় বিয়ে করেছে বিদেশ ফেরত স্বামী। অথচ ঝি-এর কাজ করা স্ত্রীর কষ্টার্জিত টাকা ও স্ত্রীর ও জমি জমি বিক্রয়ের টাকায় বিদেশ গিয়েছিল ওই পাষন্ড স্বামী। এঘটনায় বগুড়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে যৌতুক নিরোধ আইনে একটি মামলা দায়ের করেছেন নির্যাতিতা গৃহবধু সেলিনা বেগম (৩৮)।
জেলার নন্দীগ্রাম উপজেলার ৫নং ভাটগ্রাম ইউনয়নের কালিশ মধ্যপাড়া গ্রামে ঘটনাটি ঘটেছে। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। সুবিচার চেয়ে নির্যাতিতা গৃহবধু প্রশাসন ও সাংবাদিক সহ বিভিন্ন মহলে প্রতিনিয়ত ঘুরপাক করছে। যৌতুক গত আগষ্ট মাসে আদালতে মামলা দায়ের হলে মামলার ঘটনা তদন্তের জন্য নন্দীগ্রাম উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার কাছে পাঠিয়ে দেন বিজ্ঞ আদালত। তবে রহস্যজনক কারনে প্রকৃত ঘটনা আড়াল করে গত ২৮ সেপ্টেম্বর মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা খালেদা ইয়াসমিন প্রশ্নবিদ্ধ তদন্ত রিপোর্ট দিয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।
এলাকাবাসী জানান, যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে পিটিয়ে বাড়ি থেকে তারিয়ে দিয়ে প্রথম স্ত্রীর অনুমতি ছাড়াই কালিশ মধ্যপাড়া গ্রামের সাইফুল ইসলামের স্ত্রী দুই সন্তানের জননী ঝর্ণা বেগমের সাথে পরকিয়া প্রেমের টানে অন্যত্রে নিয়ে বিয়ে করেন বিদেশ ফেরত আবুল কালাম আজাদ।
মামলার বিবরণ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, নন্দীগ্রাম ৫নং ভাটগ্রাম ইউনয়নের কালিশ মধ্যপাড়া গ্রামের জামাত আলীর ছেলে আবুল কালাম আজাদের সাথে একই উপজেলার ৩নং ভাটরা ইউনিয়নের বারইপাড়া গ্রামের মৃত গোলাম রসুলের মেয়ে সেলিনা বেগমের ২২ বছর পূর্বে বিয়ে হয়। তাদের সংসার জীবনে দুটি পুত্র সন্তান রয়েছে। বড় ছেলে প্রবাসী ও ছোট ছেলে ১০ম শ্রেনিতে পড়াশুনা করে। বিয়ের পর সংসারে অভাব অনটন থাকায় গৃহবধু সেলিনা বেগম অন্যের বাড়িতে ঝি-এর কাজ করতেন। বিয়ের পর থেকেই মাঝেমধ্যেই যৌতুকের দাবিতে ওই গৃহবধু সেলিনাকে মারধর করতো স্বামীসহ শ্বশুর জামাত আলী ও শ্বাশুরী খইমন। একপর্যায়ে স্ত্রীর কষ্টার্জিত টাকা ও স্ত্রীর ও জমি জমি বিক্রয়ের টাকায় বিদেশ যায় স্বামী কালম। প্রবাসে চাকুরিতে ব্যর্থ হয়ে দেশে ফিরে আসে স্বামী। এরপর কুমিড়া পন্ডিতপুকুর এলাকার কোশাষ গ্রামের দালাল খ্যাত রুহুল কুদ্দুস ও কাহালু উপজেলার জামগ্রামে মোশাহারা গ্রামের রফিকুল ইসলাম রফিকের প্ররোচনায় ব্যবসা করার নামে গৃহবধু সেলিনার পরিবারের কাছে ১লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে স্বামী কালাম। যৌতুকের টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে গৃহবধু সেলিনার উপর শুরু হয় নির্যাতন। যৌতুকের টাকার দাবিতে গত ২১জুন গৃহবধু সেলিনাকে মারধর করে পিতার বাড়ি বারইপাড়া গ্রামে পাঠিয়ে দেয়্ াহয়। এনিয়ে বেশ কয়েকবার দুই পরিবারের মধ্যে দেনদরবার হয়েছে বলেও মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।
মামলার বাদী নির্যাতিতা গৃহবধু সেলিনা বেগম বলেন, আমার দুটি সন্তানই বড়। আমি সংসার হারা হয়ে পথে পথে ঘুরছি। আমি আমার সংসারে ফিরতে চাই। আইনের সুবিচারের দাবি নিয়ে বিভিন্ন মহলে ঘুরছেন ওই গৃহবধু। এ্যাডভোকেট মনিরুল কবির মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।