
রবিবার, ২৭ মার্চ ২০১৬
প্রথম পাতা » আইন- আদালত | জাতীয় সংবাদ | বক্স্ নিউজ | শিরোনাম » আপিল বিভাগে দণ্ডিত কামরুল, মোজাম্মেল
আপিল বিভাগে দণ্ডিত কামরুল, মোজাম্মেল
বিজয় নিউজ: ঢাকা: আদালত অবমাননার দায়ে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম এবং মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক।
সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ তাদের প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে সাত দিনের কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছে।
তবে রবিবার সকালে দুই মন্ত্রীর উপস্থিতিতে শুনানি শেষে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ তাদের আবেদন খারিজ করে দিয়ে এ রায় দেয়।
আপিল বিভাগের এ রায় নজিরবিহীন। নিকট অতীতে আদালত অবমাননার দায়ে দুজন কেবিনেট মন্ত্রীকে সর্বোচ্চ আদালতে দণ্ডিত করার ঘটনা ঘটেনি।
আজ সকাল পৌনে ৯টার দিকে তাদের মন্তব্যের বিষয়ে ব্যাখ্যা ও শো’কজ নোটিশের জবাব দিতে সুপ্রিম কোর্টে ফের হাজির হন দুই মন্ত্রী। কামরুল ইসলামের পক্ষে শুনানি করেন আবদুল বাসেত মজুমদার। মোজাম্মেল হকের ক্ষমা চেয়ে করা আবেদনটি উপস্থাপন করেন তার আইনজীবী ব্যারিস্টার রফিক-উল হক।
আদালতের নির্দেশে দুই মন্ত্রীর করা মন্তব্য পড়ে শোনান অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।
এরপর সকাল দশটা দশ মিনিট পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করা হয়। নির্ধারিত সময়ে ফের বসে চূড়ান্ত রায় দেয় আপিল বিভাগ।
গত ৫ মার্চ ঢাকায় এক গোলটেবিল আলোচনায় প্রধান বিচারপতিকে বাদ দিয়ে নতুন বেঞ্চ গঠন করে মীর কাসেমের আপিলের পুনঃশুনানির দাবি তোলেন কামরুল।
তিনি বলেন, আপিলের শুনানিতে যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন দলের কাজ নিয়ে প্রধান বিচারপতির অসন্তোষ প্রকাশের মধ্য দিয়ে ‘রায়েরই ইঙ্গিত’ মিলছে। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী মোজাম্মেল হকও প্রধান বিচারপতির মন্তব্য প্রত্যাহারের দাবি জানান।
তাদের ওই বক্তব্য সে সময় তুমুল আলোচনার জন্ম দেয়। মীর কাসেমের আইনজীবী সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি খন্দকার মাহবুব হোসেন এবং বিএনপি নেতারা মন্ত্রীদের বক্তব্যকে ‘ঔদ্ধত্যপূর্ণ’ আখ্যায়িত করে বলেন, এটা বিচার বিভাগের ওপর হস্তক্ষেপ।
এ ধরনের মন্তব্য এড়ানোর পাশাপাশি সবাইকে ধৈর্য্য ধরার আহ্বান জানিয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, বিতর্কিত বক্তব্যে যুদ্ধাপরাধের বিচারই প্রশ্নবিদ্ধ হবে।
এরপর ৮ মার্চ মীর কাসেমের চূড়ান্ত রায় ঘোষণার আগে প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা আপিল বিভাগের সব বিচারককে নিয়ে বসে দুই মন্ত্রীকে তলবের আদেশ দেন।
দুই মন্ত্রীর দেওয়া যে বক্তব্য সংবাদমাধ্যমে এসেছে তা বিচার প্রশাসনের ওপর হস্তক্ষেপ এবং সুপ্রিম কোর্টের সম্মান ও মর্যাদাকে হেয় করার শামিল বিবেচনা করে কারণ দর্শাও নোটিস দেওয়া হয় তাদের।
ওই বক্তব্যের কারণে তাদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার কার্যক্রম কেন শুরু করা হবে না- তা ১৪ মার্চের মধ্যে জানাতে বলা হয় নোটিসে। সেই সঙ্গে দুই মন্ত্রীকে আদালতে হাজির হতে নির্দেশ দেওয়া হয়।
আর মীর কাসেমের আপিল মামলার রায়ে ট্রাইব্যুনালের দেওয়ার সর্বোচ্চ সাজার আদেশই আপিল বিভাগ বহাল রাখে।
আপিল বিভাগের নির্দেশনা অনুযায়ী মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী ১৫ মার্চ সকালে আদালতে হাজির হন। অন্যদিকে বিদেশ সফরে থাকা খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলামের আইনজীবী সময়ের আবেদন করেন। এরপর আপিল বিভাগ দুই মন্ত্রীর হাজিরার জন্য ২০ মার্চ নতুন তারিখ ঠিক করে দেয়।
ওইদিন তারা দুজনেই হাজির হলে আদালত জানায়, কামরুলের জবাব যথাযথ হয়নি। তাকে আবার ব্যাখ্যা দাখিলের জন্য ২৭ মার্চ দিন ঠিক করে দেয় আদালত। মোজাম্মেলকেও একই দিনে হাজির হতে বলা হয়।