
শনিবার, ২৬ মার্চ ২০১৬
প্রথম পাতা » কুষ্টিয়ার সংবাদ | জাতীয় সংবাদ | বক্স্ নিউজ | শিরোনাম » কুষ্টিয়ায় আ’লীগ নেতার দোকান থেকে অস্ত্র উদ্ধার : জাসদের নব নির্বাচিত চেয়ারম্যানসহ আটক ১০!
কুষ্টিয়ায় আ’লীগ নেতার দোকান থেকে অস্ত্র উদ্ধার : জাসদের নব নির্বাচিত চেয়ারম্যানসহ আটক ১০!
বিজয় নিউজ: নিজস্ব প্রতিনিধি, কুষ্টিয়া :কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলায় আওয়ামী লীগ নেতার দোকান থেকে দুটি পিস্তলসহ ১১ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করেছে পুলিশ। এসময় সেখান থেকে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) মনোনিত নব নির্বাচিত এক ইউপি চেয়ারম্যান, দোকান মালিক আওয়ামী লীগনেতাসহ ১০জনকে আটক করে পুলিশ। তবে অভিযোগ উঠেছে নব নির্বাচিত চেয়ারম্যানকে ফাঁসাতে অস্ত্র উদ্ধারের নাটক সাজানো হয়েছে।
কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শি সূত্রে জানা গেছে, শনিবার বেলা ১১টার দিকে মিরপুর উপজেলার আমবাড়িয়া ইউনিয়নের হালসা বাজারে যান ওই ইউনিয়নের সদ্য নির্বাচিত চেয়ারম্যান ও মিরপুর উপজেলা জাসদের সহসভাপতি মশিউর রহমান মিলন। এ সময় বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা হাসান আলী তাকে চা খাওয়ার কথা বলে তার দোকানে ডেকে নেয়। চেয়ারম্যানকে দেখে তার কয়েকজন সমর্থকরা সেখানে গেলে পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী আব্দুল বারী টুটুলের ক্যাডাররা মটর সাইকেল মহড়া দিয়ে এসে মিলনের ২ সমর্থককে মারধর করে। পরে টুটুলের ক্যডাররা মিলন ও দোকান মালিক হাসানকে ওই দোকানের মধ্যে আটকে রাখেন। বাঁধার মুখে বেরোতে না পেরে চেয়ারম্যান মশিউর রহমান স্থানীয় পুলিশ ক্যাম্প ও মিরপুর থানায় ফোন করে সাহায্য চাইলে কয়েক ঘন্টা পর পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। তবে সে সময় পুলিশ চেয়ারম্যানকে উদ্ধার না করে ওই দোকানে তল্লাশি শুরু করে। এক পর্যায়ে পুলিশ ওই দোকানে রাখা ধানের বস্তা থেকে ২টি পিস্তল, ১১ রাউন্ড গুলি ও দুটি ম্যাগজিন উদ্ধার করে। পরে পুলিশ মশিউর রহমান, দোকানের মালিক হাসান আলীসহ তার ১০ সমর্থককে আটক করে কুষ্টিয়া পুলিশ লাইনে নিয়ে আসেন। আওয়ামী লীগ নেতা হাসান সদ্য শেষ হওয়া ইউপি নির্বাচনে দলের বিদ্রোহী প্রার্থী ছিলেন।
হালসা পুলিশ ক্যাম্পের উপপরিদর্শক আবদুল গফুরের সাথে মোবাইলে কথা হলে বলেন,‘বেলা ২টার দিকে আবদুল বারী টুটুলের লোকজন (আওয়ামী লীগ মনোনিত চেয়ারম্যান প্রার্থী ছিল ও একই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি) মিলন চেয়ারম্যানকে ঘরের মধ্যে আটকে রাখে। খবর পেয়ে ঘরে তল্লাশী করে ধানের বস্তার ভেতরকে অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। পরে মিরপুর থানা পুলিশ তাদের থানায় নিয়ে যায়।
দুপুর ২টার দিকে নির্বাচিত চেয়ারম্যান মিলনের সাথে মোবাইলে কথা হলে জানান, হাসান ডাকার পর তার দোকানে আসি। এ সময় টুটুলের লোকজন আমার সমর্থকদের মারধরে করে আমাকে দোকানে আটকিয়ে রাখে। আমিই পুলিশকে ফোন করে আসতে বলি। পরে পুলিশ দোকানে অস্ত্র পাওয়া গেছে বলে জানায়।
মিলনের স্ত্রী হামিদা খাতুন ডলি অভিযোগ করে জানান,‘তার স্বামী সকালে ডাক্তার দেখানোর জন্য বাড়ি থেকে বের হয়ে হালসা বাজারে যায়। ওই ইউনিয়নের পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী আবদুল বারী টুটুল যড়যন্ত্র করে আমার স্বামীকে ফাঁসিয়েছে। গত মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত ইউপি নির্বাচনে উপজেলার আমবাড়ীয়া ইউনিয়নে জাসদ মনোনিত প্রার্থী মশিউর রহমান মিলন চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। নির্বাচনের পর থেকেই ওই ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ মনোনিত চেয়ারম্যান প্রার্থী আব্দুল বারী টুটুল ও তার সমর্থকরা জাসদ নেতাকর্মীদের হুমকি দিয়ে আসছে।’
জেলা জাসদের সভাপতি গোলাম মহাসীন বলেন,‘নির্বাচনের আগে থেকেই মশিউর রহমানের ওপর বিরোধী পক্ষ (আ.লীগ) বিভিন্ন ভাবে হয়রানি করার ফাঁদ পেতে আসছিল। এরই ধারাবাহিকতায় অস্ত্র উদ্ধারের নাটক সাজানো হয়েছে। নির্বাচনী প্রচারনা চলা কালে টুটুলের লোকজন জাসদের নির্বাচনী ক্যাম্পে হামলা চালিয়ে ১০টি মটর সাইকেল ভাংচুর করে। ষড়যন্ত্র করে আমাদের দলের চেয়ারম্যানকে ফাঁসানোর চেষ্টা চল। আমরা ১৪ দলের শরিক একটি সংগঠন হয়ে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মিদের কাছ থেকে এধরনের ঘটনা আশা করিনি।’ এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
তবে পুলিশের কোন শীর্ষ কর্মকর্তা বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলছেন না। মিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী জালাল উদ্দীনের মোবাইলে রিং দিলেও তিনি ফোন ধরেননি।