
বুধবার, ২৩ মার্চ ২০১৬
প্রথম পাতা » অপরাধ চিত্র | কুষ্টিয়ার সংবাদ | জাতীয় সংবাদ | বক্স্ নিউজ | শিরোনাম » নৌকা প্রতীক পেতে কুষ্টিয়ায় যুদ্ধাপরাধীর ভাতিজার দৌঁড়ঝাপ!
নৌকা প্রতীক পেতে কুষ্টিয়ায় যুদ্ধাপরাধীর ভাতিজার দৌঁড়ঝাপ!
শামসুল আলম স্বপন, বিজয় নিউজ: নৌকা প্রতীক পেলে বিজয় নিশ্চিৎ। ঘুঁচেও যাবে পিচ কমিটির চেয়ারম্যান কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধী রাজাকার আবু তালেবের ভাতিজার দুর্নাম । নৌকা স্বাধীনতার প্রতীক । সেই প্রতীক রাজাকারের ভাতিজা পেলে ওই পরিবারের সদস্যদের একদিন স্বাধীনতার স্বপক্ষের পরিবার বলে দাবি করতেও কোন সমস্যা হবে না। এমন হীনমানসিকতা নিয়েই নৌকা প্রতীকের জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে কুষ্টিয়া সদর উপজেলার ইবি থানার হরিনারায়ণ পুর ইউনিয়নের বেড়বাড়াদী গ্রামের কওসের মন্ডলের ছেলে কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধী আবু তালেব মন্ডলের ভাতিজা মহিউদ্দিন মন্ডল। যত টাকা লাগুগ না কেন নৌকা তার চাই। নৌকা প্রতীক পাওয়ার জন্য তিনি ধর্ণা দিচ্ছেন থানা ও জেলার আওয়ামীলীগ নেতৃবৃন্দের কাছে। তার দৌঁড় ঝাপ দেখে আতংকিত হরিনারায়ণ পুর ইউনিয়ন আওয়ামীগের ত্যাগী নেতা-কর্মীরা। নেতাকর্মীদের বক্তব্য টাকার জোরে যদি কুখ্যাত রাজাকার আবু তালেব মন্ডলের ভাতিজা নৌকা প্রতীক পেয়ে যায় তা হলে আগামীতে কেউ আর আওয়ালীগের রাজনীতি করবে না।
হরিনারায়ন পুর ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ড আওয়ামীর সভাপতি আতিয়ার রহমান এব্যাপরে জানান, কুষ্টিয়া মুক্তিযোদ্ধাদের করা তালিকায় কুখ্যাত রাজাকার হিসেবে আবু তালেব ৯৯ নং ব্যক্তি । ৭১ সালে আবু তালেব হরিনায়ণপুর ইউনিয়নের পিচ কমিটির চেয়ারম্যান হওয়ার পর রাজাকার ও পাক-হানাদার বাহিনীকে দিয়ে জনগণের উপর নির্মম নির্যাতন চালায় । একই ইউনিয়নের শান্তি ডাঙ্গাগ্রামের ডা: রবীন্দ্রনাথ ভৌমিকের বাড়ি, পূর্ব আব্দালপুরের ফরমান মন্ডল ফনু’র বাড়ি ও পদ্মনগর গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল হোসেনের বাড়ি লুটপাট করে এবং আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেয়। হরিনারায়ণ পুরের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী বাবু দোয়ারকা দাস আগরওয়ালার টাকা-পয়সা মালামাল লুটপাট করে ওই রাজাকার পরিবার । এছাড়া খুন ধর্ষণ ডাকাতির মত জঘন্য কাজে লিপ্ত ছিল ওই পরিবারের সদস্যরা। সেই পরিবারের ছেলে যদি টাকার জোরে নৌকা প্রতীক পায় তা হলে আমরা মেনে নেব না।
তিনি জানান ইতোমধ্যে মহিউদ্দিন মন্ডলের মনোনয়নের বিরোধীতা করে এলাকাবাসী তাঁর বিরুদ্ধে ইউনিয়ন ব্যাপী লিফলেট প্রচার করেছে। এতে ইউনিয়নের আওয়ামীলীগ নেতা-কর্মীসহ জনসাধারণ মহিউদ্দিন মন্ডলের বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছে।
অনুরূপ অভিযোগ করেছেন হরিনারায়নপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি সরকার আক্তরুজ্জামান টগর ও ৯নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি তবিবর রহমান তোতা। তাঁরাও চান যুদ্ধাপরাধী পরিবারের সন্তানকে যেন মনোনয়ন দেয়া না হয়।
তাঁদের বক্তব্য রাজাকার পরিবারের সন্তানকে মনোনয়ন না দিয়ে আওয়ামী পরিবারের ত্যাগী যে কোন নেতাকে মনোনয়ন দিলে কারো আপত্তি থাকবে না।
আওয়ামীলীগ সদর থানা কমিটির সদস্য ও হরিনায়ণপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফা জানান, মহিউদ্দিন মন্ডল কুখ্যাত রাজাকার পরিবারের সন্তান । তাকে মনোনয়ন দিলে সংগঠন চরম ক্ষতিগ্রস্থ হবে। মহিউদ্দিন মন্ডল বাদে আওয়ামীলীগের যে কোন ত্যাগী নেতাকর্মীকে মনোনয়ন দেয়া হলে আমরা আন্তরিক ভাবে তার ভোট করবো। কিন্তু কোন অবস্থাতেই আমরা মহিউদ্দিন মন্ডলকে মেনে নেব না। তিনি আরো বলেন জননেত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন কোন রাজাকারের জায়গা আওয়ামীলীগে হবে না । কোন রাজাকার পরিবারের হাতে নৌকা তুলে দেয়া যাবে না। এরপর কেউ কেউ টাকার লোভে রাজাকার পরিবারকে আওয়ালীগ পরিবার বানাতে চাচ্ছে । আমরা বঙ্গবন্ধুর সৈনিকরা তা হতে দেব না।
এব্যাপরে কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আজগর আল কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বিজয় নিউজকে বলেন, কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব উল আলম হানিফের নির্দেশে কুষ্টিয়া জেলায় সৎ এবং ত্যাগী নেতা-কর্মীদের মনোনয়ন দেয়া হচ্ছে । এব্যাপারে আমরা তৃণমূল নেতা-কর্মীদের মতামত প্রাধান্য দিচ্ছি । যুদ্ধাপরাধী পরিবারের কোন সদস্যের মনোয়ন দেয়ার প্রশ্নই ওঠে না। এব্যাপারে আমরা চরম সর্তকতা অবলম্বন করছি। তিনি বলেন মহিউদ্দিন মন্ডলের চাচা আবু তালেব যুদ্ধাপরাধী তাতে কোন সন্দেহ নেই । মহিউদ্দিন মন্ডলকে মনোনয়ন দেয়া হচ্ছে কিনা সে ব্যাপরে তিনি স্পষ্ট করে কিছু বলেন নি ।
এব্যাপরে মহিউদ্দিন মন্ডলের বক্তব্য নেয়ার জন্য তাঁর মোবাইল নম্বরে বার বার যোগাযোগ করেও তাঁকে পাওয়া যায় নি। উল্লেখ্য আগামী ৫ মে কুষ্টিয়া সদর উপজেলা ইউপি নির্বাচন হতে পারে এমন সংবাদের ভিত্তিতেই মনোনয়ন প্রত্যাশীরা জেলার নেতাদের কাছে ছুটাছুটি শুরু করেছেন।